আজ মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
Logo সাতক্ষীরায় ট্রলির ধাক্কায় উল্টে গেল মাহেন্দ্র, চাপা পড়ে মা ও ছেলে নিহত Logo আইপিএল নিলামে বিদেশি ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে বিচিত্র নিয়ম Logo বিজয় দিবসে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন রাষ্ট্রপ‌তি ও প্রধান উপদেষ্টা Logo সাতক্ষীরায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বরখাস্ত Logo নির্বাচিত হলে আশাশুনির সব বেঁড়িবাঁধ টেকসই করা হবে: কাজী আলাউদ্দিন Logo সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা Logo তালায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত Logo কালিগঞ্জে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা Logo সুদানে নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর পরিচয় প্রকাশ Logo হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক গ্রেপ্তার, তদন্তে নতুন অগ্রগতি
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম 01711-211241, 01971 211241

শ্যামনগরে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হুমকিতে, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ০২:৫২:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৪৯ বার পড়া হয়েছে

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শ্যামনগরে চলমান উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙনপ্রবণ এলাকা থেকে প্রতিদিনই লাখ লাখ ঘনফুট বালু তোলা হচ্ছে, যা বন্ধ না হলে এই মেগা প্রকল্প পানিতে যাবে।

সোমবার (১১ আগস্ট) শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দা মো. রুস্তম আলী, মাহফিজুর রহমান বাবু, প্রমথ মহালদার ও সুজন মণ্ডল এই দাবি জানান।

তাদের অভিযোগ, শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, কৈখালী, আটুলিয়া ও কাশিমাড়ী এলাকায় তীব্র ভাঙন থাকায় এ বছর এসব এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। পরিবর্তে আশাশুনি উপজেলার হিজলিয়া চরকে বালুমহাল ঘোষণা করা হয়েছে, যা ইজারা নিয়েছেন সাবেক এমপি জগলুল হায়দারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রহমান বাবু ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনোয়ারুল ইসলাম আঙুর।

তারা অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট বালুমহাল দূরে হওয়ায় বাবু ও আঙুরের লোকজন শ্যামনগরের দুগার্বাটি, জেলখালী, ঝাপা, বিড়ালাক্ষ্মী, জেলিয়াখালীসহ ভাঙনপ্রবণ স্থানগুলো থেকে রাতের অন্ধকারে ৩০-৩২টি বোট, কার্গো ও বডির মাধ্যমে বালু লুট করছে। স্থানীয়রা বাধা দিলে চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখানো হয়।

বুড়িগোয়ালীনি নৌ থানার পুলিশকে অবহিত করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। বরং পুলিশ নানা অজুহাতে বালুখেকোদের সহায়তা করছে বলে দাবি তাদের।

আনোয়ারুল ইসলাম আঙুর বলেন, “আমার লোকদের নিষেধ করা হলেও মাঝেমধ্যে তারা এমন ভুল করছে। নির্দিষ্ট চর দূরে হওয়ায় কিছু বোটমালিক দুষ্টামি করে।”
বুড়িগোয়ালীনি নৌ থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। খবর পেয়ে অভিযান চালালে অনেক সময় তারা আগেই পালিয়ে যায়।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রিন্স রেজা বলেন, “অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আইনি পদক্ষেপের সুপারিশ করবো।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন জানান, “ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পাশ থেকে পুনরায় বালু তোলা যাবে না। যারা করবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

স্থানীয়দের দাবি, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে টেকসই বাঁধ নির্মাণের স্বপ্ন ভেস্তে যাবে, আর সরকারের হাজার কোটি টাকার প্রকল্পও ব্যর্থ হবে।

ট্যাগস:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

লেখকের তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় সংবাদ

সাতক্ষীরায় ট্রলির ধাক্কায় উল্টে গেল মাহেন্দ্র, চাপা পড়ে মা ও ছেলে নিহত

শ্যামনগরে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হুমকিতে, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি

আপডেট সময়: ০২:৫২:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শ্যামনগরে চলমান উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙনপ্রবণ এলাকা থেকে প্রতিদিনই লাখ লাখ ঘনফুট বালু তোলা হচ্ছে, যা বন্ধ না হলে এই মেগা প্রকল্প পানিতে যাবে।

সোমবার (১১ আগস্ট) শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দা মো. রুস্তম আলী, মাহফিজুর রহমান বাবু, প্রমথ মহালদার ও সুজন মণ্ডল এই দাবি জানান।

তাদের অভিযোগ, শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, কৈখালী, আটুলিয়া ও কাশিমাড়ী এলাকায় তীব্র ভাঙন থাকায় এ বছর এসব এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। পরিবর্তে আশাশুনি উপজেলার হিজলিয়া চরকে বালুমহাল ঘোষণা করা হয়েছে, যা ইজারা নিয়েছেন সাবেক এমপি জগলুল হায়দারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রহমান বাবু ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনোয়ারুল ইসলাম আঙুর।

তারা অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট বালুমহাল দূরে হওয়ায় বাবু ও আঙুরের লোকজন শ্যামনগরের দুগার্বাটি, জেলখালী, ঝাপা, বিড়ালাক্ষ্মী, জেলিয়াখালীসহ ভাঙনপ্রবণ স্থানগুলো থেকে রাতের অন্ধকারে ৩০-৩২টি বোট, কার্গো ও বডির মাধ্যমে বালু লুট করছে। স্থানীয়রা বাধা দিলে চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখানো হয়।

বুড়িগোয়ালীনি নৌ থানার পুলিশকে অবহিত করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। বরং পুলিশ নানা অজুহাতে বালুখেকোদের সহায়তা করছে বলে দাবি তাদের।

আনোয়ারুল ইসলাম আঙুর বলেন, “আমার লোকদের নিষেধ করা হলেও মাঝেমধ্যে তারা এমন ভুল করছে। নির্দিষ্ট চর দূরে হওয়ায় কিছু বোটমালিক দুষ্টামি করে।”
বুড়িগোয়ালীনি নৌ থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। খবর পেয়ে অভিযান চালালে অনেক সময় তারা আগেই পালিয়ে যায়।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রিন্স রেজা বলেন, “অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আইনি পদক্ষেপের সুপারিশ করবো।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন জানান, “ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পাশ থেকে পুনরায় বালু তোলা যাবে না। যারা করবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

স্থানীয়দের দাবি, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে টেকসই বাঁধ নির্মাণের স্বপ্ন ভেস্তে যাবে, আর সরকারের হাজার কোটি টাকার প্রকল্পও ব্যর্থ হবে।