আজ রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
Logo শিশু ও যুবদের মাদক মুক্ত রাখতে খেলাধুলা ও শিক্ষার বিকাশ অপরিহার্য: অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার Logo কালীগঞ্জে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী আলাউদ্দিনের পথসভা ও দোয়া অনুষ্ঠান Logo শ্যামনগরে প্রতিবন্ধিতা উত্তরণ মেলা সমাপনী ও সম্মাননা ক্রেস্ট বিতরণ Logo বড়দলে এমপি প্রার্থী রবিউল বাশারের গণসংযোগ ও মতবিনিময় Logo ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের আন্ত-বিভাগ ক্রিকেটে তিতুমীর ফাইটার্সের জয় Logo সাতক্ষীরায় ক্রীসকপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাটকেলঘাটা চ্যাম্পিয়ন Logo মৌচাক সাহিত্য পরিষদের সাহিত্য সম্মেলন, সংবর্ধনা ও প্রকাশনা উৎসব Logo দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর জন্য আলিপুরে দোয়া মাহফিল Logo বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাতক্ষীরা জেলা সাইবার দলের দোয়া মাহফিল Logo সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম 01711-211241, 01971 211241

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ১১:২৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

সাফল্যের সাথে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি ও বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে রয়েছে—রাষ্ট্র সংস্কারে এই জাতীয় ঐক্য আমাদের ধরে রাখতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি, মেয়াদ শেষ হয় ৩১ অক্টোবর।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ আমাদের জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথকে কেবল সুগমই করবে না, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।

তিনি বলেন, জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে, এমন কিছু পরিবর্তন যা এদেশে আর কখনও কোনো স্বৈরাচারের আগমন ঘটতে দেবে না, এমন কিছু পরিবর্তন যা আমাদের জাতীয় জীবনে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাবে, সবার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।

ড. ইউনূস বলেন, সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, আমরা নিজেরাই এই সংস্কার প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা বিদেশিদের আসতে দেখেছি। বন্ধু রাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে-আমাদের নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এই কারণেই সব রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে, রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়েছে এবং আমাদের সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই বিশ্ববাসীর দরবারে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তুলে ধরেছি।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নেতাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাদের সবাইকে আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

এই জুলাই সনদ সারা বিশ্বের জন্যই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর আর কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ঘটনা হয়ে থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও সংকটকালীন সময়ে দেশ গঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ঐকমত্য কমিশন গঠনের কথা বিবেচনা করবে।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস। এর পাশাপাশি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা যারা মাসের পর মাস এই দীর্ঘ আলোচনার সাথে থেকেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সব কার্যকলাপ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, একক সংগঠন, একক সংস্থা অথবা একক সরকার দিয়ে সম্ভব হবে না, এজন্য সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে একতা থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য ধরে রাখতে হবে।

ট্যাগস:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

লেখকের তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় সংবাদ

শিশু ও যুবদের মাদক মুক্ত রাখতে খেলাধুলা ও শিক্ষার বিকাশ অপরিহার্য: অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময়: ১১:২৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

সাফল্যের সাথে ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি ও বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে রয়েছে—রাষ্ট্র সংস্কারে এই জাতীয় ঐক্য আমাদের ধরে রাখতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি, মেয়াদ শেষ হয় ৩১ অক্টোবর।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ আমাদের জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথকে কেবল সুগমই করবে না, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।

তিনি বলেন, জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে, এমন কিছু পরিবর্তন যা এদেশে আর কখনও কোনো স্বৈরাচারের আগমন ঘটতে দেবে না, এমন কিছু পরিবর্তন যা আমাদের জাতীয় জীবনে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাবে, সবার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।

ড. ইউনূস বলেন, সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, আমরা নিজেরাই এই সংস্কার প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা বিদেশিদের আসতে দেখেছি। বন্ধু রাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে-আমাদের নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এই কারণেই সব রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে, রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়েছে এবং আমাদের সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই বিশ্ববাসীর দরবারে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তুলে ধরেছি।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নেতাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাদের সবাইকে আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

এই জুলাই সনদ সারা বিশ্বের জন্যই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর আর কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ঘটনা হয়ে থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও সংকটকালীন সময়ে দেশ গঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ঐকমত্য কমিশন গঠনের কথা বিবেচনা করবে।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস। এর পাশাপাশি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা যারা মাসের পর মাস এই দীর্ঘ আলোচনার সাথে থেকেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সব কার্যকলাপ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ আছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, একক সংগঠন, একক সংস্থা অথবা একক সরকার দিয়ে সম্ভব হবে না, এজন্য সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে একতা থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য ধরে রাখতে হবে।