মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আবারও বাংলাদেশ সফরে আসছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ মে) দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন তিনি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার প্রথম সফর এটি। লু’র এই সফরকে ঘিরে কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছে দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে। এই অঞ্চলে বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়ে দেখভালকারী ডোনাল্ড লু বেশ আলোচিত। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর চারবার বাংলাদেশ সফর করেছেন লু। এর আগে গত জুলাইতে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সঙ্গী হয়ে ঢাকায় আসেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এবং মার্কিন ভিসানীতিসহ নানামুখী তৎপরতার মধ্য দিয়ে সেই সফরটি আলোচিত ছিল।
এই সফরকে ঘিরে আবারও সরগরম রাজনৈতিক অঙ্গন। আওয়ামী লীগ বলছে, দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে এ সফর গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ডোনাল্ড লু’র এই সফর নিয়ে কোনো আগ্রহই নেই, এমন দাবি বিএনপির। তবে তার এবারের সফর যতটা না রাজনৈতিক তার চেয়েও বেশি কূটনৈতিক বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। আলোচনা হবে জলবায়ু সংকট ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি আর পেছনে ফিরে যাবে না। নিষেধাজ্ঞার পুরোনো শঙ্কা উড়িয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আমরা কোনো উত্তাপ ছড়াতে যাইনি। যেহেতু সামনে আর কিছু নেই, তাই ডোনাল্ড লু এসে সরকার হঠানোর অভিসন্ধি আছে কি না- তা বিএনপি ভালো বলতে পারবে।
অন্যদিকে ডোনাল্ড লু’র এই সফর একেবারেই আমলে নিচ্ছে না বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কে এলো আর কে গেল তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। তিনি বলেন, তার দলের প্রধান শক্তি হলো জনগণ। এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আজ সোমবার (১৩ মে) সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। প্রধানমন্ত্রী চতুর্থবার নির্বাচিত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে এবং নতুন উচ্চতায় নেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। মার্কিন প্রশাসন থেকে যারাই বাংলাদেশে সফর করুক না কেন, আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। সেখানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে, আমাদের নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। ঢাকা সফরের সময় ডোনাল্ড লু পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা রয়েছে লু’র।