মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের তালিকায় উঠে এসেছে ৯ বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীর নাম। ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ এশিয়ার নবম সংস্করণের তালিকায় তারা স্থান পেয়েছেন। বাণিজ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা ৩০ বছরের কম বয়সী তরুণ-তরুণীদের নিয়ে ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ তালিকা প্রকাশ করে ফোর্বস। এ বছর বাংলাদেশের ৯ জন এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। ফোর্বস জানিয়েছে, এই তালিকায় ৩০ বছরের কম বয়সী ৩০০ তরুণ উদ্যোক্তা, নেতা ও উদ্ভাবককে তুলে ধরা হয়েছে, যারা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে পরিবর্তন আনছেন এবং উদ্ভাবন করে যাচ্ছেন। তালিকায় স্থান পাওয়া ৯ বাংলাদেশির নাম হলো- রেদওয়ান আহমেদ একজন পুরস্কার বিজয়ী ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। তিনি গণমাধ্যম, মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপন বিভাগে ফোর্বসের এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। রোহিঙ্গা সংকট ও পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ওপর শোষণ নিয়ে তৈরি প্রতিবেদন তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে অন্যতম। স্থানীয় সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য কাজ করা বাংলাদেশি জার্নালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা রেদোয়ান আহমেদ।
মেহেদী স্বরণ : হ্যালোটাস্কের সহপ্রতিষ্ঠাতা মেহেদী স্বরণ কনজিউমার টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। হ্যালোটাস্ক এমন একটি অ্যাপ, যা গৃহকর্মীদের নিয়ে কাজ করে। সংস্থাটি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বিনিয়োগ পেয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও অক্সফামের অনুদানও পেয়েছে। হ্যালোটাস্কের লক্ষ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে ১ লাখ গৃহকর্মীকে তাদের প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করা।
ফাহাদ আহমেদ : ‘উইন্ড ডট অ্যাপ’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহাদ আহমেদ ফাইন্যান্স অ্যান্ডভেঞ্চার ক্যাপিটাল ক্যাটাগরিতে ফোর্বসের এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। উইন্ড ডট অ্যাপ দ্রুত এবং খুবই কম খরচে ক্রস-বর্ডার রেমিট্যান্স সুবিধা দেয়। স্টার্টআপটি ৩৮ লাখ ডলার তহবিল পেয়েছে। আব্দুল গাফফার সাদী, মো. শহিদুল ইসলাম এবং মো. তুষার গড়ে তুলেছেন ‘দ্রুতলোন’। এ কাজের জন্য ফাইন্যান্স অ্যান্ড ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিভাগে তালিকায় জায়গা পেয়েছেন তারা। ঢাকাভিত্তিক এই স্টার্টআপ কাগজপত্র মূল্যায়ন করে সহজে ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসাদের ঋণ পেতে সহায়তা করে। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ‘দ্রুতলোন’ ২০ লাখ ডলারের বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।
মুমতাহিনা আনিকা ও সুলতান মনি : ফাইন্যান্স অ্যান্ড ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ক্যাটাগরিতে আরও জায়গা করে নিয়েছেন ‘জাতিক’র সহপ্রতিষ্ঠাতা মুমতাহিনা আনিকা ও সুলতান মনি। ‘জাতিক’ ছোট কোম্পানিগুলোকে অ্যাকাউন্টিং পরিচালনা করতে সাহায্য করার জন্য সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সমাধান দেয়। কোম্পানিটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করে। গত আগস্টে ‘জাতিক’ ১৬ লাখ ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে।
আনুশা আলমগীর : আনুশা আলমগীর কলা বিভাগ থেকে এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। ২০২৩ সালে ভেনিস বিয়েন্নালে ১৮তম আন্তর্জাতিক স্থাপত্য প্রদর্শনীতে একমাত্র বাংলাদেশি নারী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব আর্ট থেকে স্থাপত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আনুশা আলমগীর। তার ‘পর্দা’ চলচ্চিত্রটি মুসলিমদের পর্দাশীলতার প্রথার ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং এটি বেশ আলোচিত হয়। তিনি ভাস্কর্য, পেইন্টিং, ফটোগ্রাফিতেও তার সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। আনুশা আলমগীর প্রতিষ্ঠা করেছেন অনলাইন থ্রিফ্ট স্টোর ‘কালার্স ঢাকা’।