আজ বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01971 211241

সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে আহত ডাক্তারের মৃত্যু হলো

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ১১:৫৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০২৪
  • ১৩৭ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার প্রবীন চিকিৎসক এম কোরবান আলী মারা গেছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ছয়টার দিকে নগরীর মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে ৫ এপ্রিল নগরীর আকবরশাহ থানার পশ্চিম ফিরোজশাহ কলোনী এলাকায় দুর্বৃত্তের হামলার স্বীকার হন তিনি ও তার ছেলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশানের অনুসারীরা এ হামলা চালায়। নিশান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ৬ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম ফিরোজ শাহ কলোনী এলাকায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরে তিনজন ছেলেকে মারধর করছিলেন গোলাম রসুল নিশানের অনুসারীরা। বিষয়টি কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা রানা জানার পর সেখানে গিয়ে বাঁধা দেন। তখন তার ওপরেও চড়াও হয় হামলাকারীরা। রানা তাদের উদ্ধার করতে না পেরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দেন। ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মাহির সামী নামে একজনকে আটক করে। পরে তাকে ছেড়েও দেয়।

পরে ৬ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনায় গোলাম রসুল নিশান গিয়ে ওই চিকিৎসক ও তার ছেলেকে শাসিয়ে আসেন। গত ৫ এপ্রিল আসর নামাজের পর রানা স্থানীয় এক রেস্তোরাঁয় ইফতার আনতে যান। এ সময় তাকে একা পেয়ে মাহির সামি, আকিব, বগা সোহেল, ফয়জুল আকবর চৌধুরী আদর, প্রিন্স বাবু, আরিফুল্লাহ রাজু, অপূর্ব, সাগর, রিয়াদ, সংগ্রাম ও শাফায়েত মিলে মারধর করে। এ দৃশ্য দেখে ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে যান বাবা ডা. কোরবান আলী। তখন আকিব, রিয়াদ ও অপূর্ব তাঁর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। পরে হামলার ঘটনায় মামলা করেন তারা ছেলে রানা। আলী রেজা রানা বলেন, ‘তিনটি ছেলেকে মারধর করে প্রায় আধমরা করে ফেলেছিল গোলাম রসুল নিশানের সন্ত্রাসীরা। ছেলেগুলোর বন্ধুদের অনুরোধে আমি তাদের বাঁচাতে যাই। তাদের বাঁচাতে পুলিশে খবর দিই। এটাই ছিল আমার অপরাধ। এ জন্য নিশানের নির্দেশে তার অনুসারীরা আমাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। আমাকে বাঁচাতে গেলে বাবাকেও তারা মেরে রক্তাক্ত করে। আজ সকাল মারা গেছেন তিনি।’

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রব্বানী সমকালকে জানান, হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, নিহত চিকিৎসক এম কোরবান আলী সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের কবিরুল ইসলামের ছেলে। ৬০ বছর বয়সী এই চিকিৎসক পরিবার নিয়ে পশ্চিম ফিরোজশাহ কলোনির গ্রিন টাওয়ারে থাকতেন। নগরীর ষোলশহর জাহানারা ডেন্টাল কেয়ার নামে তার ব্যক্তিগত চেম্বার রয়েছে।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে আহত ডাক্তারের মৃত্যু হলো

আপডেট সময়: ১১:৫৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রামে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার প্রবীন চিকিৎসক এম কোরবান আলী মারা গেছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ছয়টার দিকে নগরীর মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে ৫ এপ্রিল নগরীর আকবরশাহ থানার পশ্চিম ফিরোজশাহ কলোনী এলাকায় দুর্বৃত্তের হামলার স্বীকার হন তিনি ও তার ছেলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশানের অনুসারীরা এ হামলা চালায়। নিশান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ৬ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম ফিরোজ শাহ কলোনী এলাকায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরে তিনজন ছেলেকে মারধর করছিলেন গোলাম রসুল নিশানের অনুসারীরা। বিষয়টি কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা রানা জানার পর সেখানে গিয়ে বাঁধা দেন। তখন তার ওপরেও চড়াও হয় হামলাকারীরা। রানা তাদের উদ্ধার করতে না পেরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দেন। ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মাহির সামী নামে একজনকে আটক করে। পরে তাকে ছেড়েও দেয়।

পরে ৬ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনায় গোলাম রসুল নিশান গিয়ে ওই চিকিৎসক ও তার ছেলেকে শাসিয়ে আসেন। গত ৫ এপ্রিল আসর নামাজের পর রানা স্থানীয় এক রেস্তোরাঁয় ইফতার আনতে যান। এ সময় তাকে একা পেয়ে মাহির সামি, আকিব, বগা সোহেল, ফয়জুল আকবর চৌধুরী আদর, প্রিন্স বাবু, আরিফুল্লাহ রাজু, অপূর্ব, সাগর, রিয়াদ, সংগ্রাম ও শাফায়েত মিলে মারধর করে। এ দৃশ্য দেখে ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে যান বাবা ডা. কোরবান আলী। তখন আকিব, রিয়াদ ও অপূর্ব তাঁর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। পরে হামলার ঘটনায় মামলা করেন তারা ছেলে রানা। আলী রেজা রানা বলেন, ‘তিনটি ছেলেকে মারধর করে প্রায় আধমরা করে ফেলেছিল গোলাম রসুল নিশানের সন্ত্রাসীরা। ছেলেগুলোর বন্ধুদের অনুরোধে আমি তাদের বাঁচাতে যাই। তাদের বাঁচাতে পুলিশে খবর দিই। এটাই ছিল আমার অপরাধ। এ জন্য নিশানের নির্দেশে তার অনুসারীরা আমাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। আমাকে বাঁচাতে গেলে বাবাকেও তারা মেরে রক্তাক্ত করে। আজ সকাল মারা গেছেন তিনি।’

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রব্বানী সমকালকে জানান, হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, নিহত চিকিৎসক এম কোরবান আলী সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের কবিরুল ইসলামের ছেলে। ৬০ বছর বয়সী এই চিকিৎসক পরিবার নিয়ে পশ্চিম ফিরোজশাহ কলোনির গ্রিন টাওয়ারে থাকতেন। নগরীর ষোলশহর জাহানারা ডেন্টাল কেয়ার নামে তার ব্যক্তিগত চেম্বার রয়েছে।