সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিবেশ আজ আস্থার সংকটে। এই কার্যালয়ের কর্মকর্তা শাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কর্মচারী হয়রানির অভিযোগে একাধিক লিখিত আবেদন জমা পড়েছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
অভিযোগকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, মেরামতের জন্য বরাদ্দ ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ, বিধিবহির্ভূত বদলি, কর্মীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক উপঢৌকন গ্রহণ এবং ব্যক্তিগত জমি জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার দাবি করা হয়েছে শাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। এমনকি সরকারি প্রশিক্ষণ ও ভাতার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে, যেখানে সহকারী কর্মীদের স্বাক্ষর জাল করে টাকা তোলা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারীদের মতে, যিনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে, তার হাতেই প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠেছে হয়রানি ও অনিয়মের ঘাঁটি। বদলি, চাকরিচ্যুতি, এমনকি শারীরিক লাঞ্ছনার মতো ভয়ভীতির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে দপ্তরের ভেতরে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত কর্মকর্তা দাবি করছেন, এই অভিযোগগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক। তার ভাষায়, “মাত্র ছয়জন কর্মচারী ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই অভিযোগ করছে।”
এই ঘটনায় যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো—একটি রাষ্ট্রীয় জনস্বাস্থ্য সংস্থা যখন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় জর্জরিত হয়, তখন এর প্রভাব পড়ে জনগণের প্রাপ্য সেবার ওপর। একদিকে অভিযোগকারীদের দাবি, অন্যদিকে অভিযুক্তের আত্মপক্ষ সমর্থন—এর মধ্যবর্তী সত্য উদঘাটনের দায়িত্ব এখন নিরপেক্ষ তদন্তকারীদের।
প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনা সময়ের দাবি। প্রতিষ্ঠান যখন ব্যক্তি-আচরণের বলয়ে বন্দি হয়ে পড়ে, তখন তার নীতিগত ভিত্তি নড়ে যায়। শ্যামনগরের এই সংকট শুধু একটি দপ্তরের নয়, এটি ব্যবস্থাপনাগত চেতনার দায়ও বয়ে আনে। তাই প্রয়োজন নিরপেক্ষ তদন্ত, দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা, এবং কর্মপরিবেশে সুশাসনের প্রতিফলন ঘটানো।