আজ শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
Logo সাতক্ষীরা থানায় হামলার চেষ্টা, পুলিশের লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি Logo যশোরে ডিবি পুলিশের অভিযানে পিস্তলসহ যুবক আটক Logo মোটরসাইকেল নিয়ে দ্বন্দ্বে ঘরে ঢুকে যুবককে গুলি করে হত্যা, গ্রেপ্তার ২ Logo সাতক্ষীরায় কোটা বিরোধীদের সাথে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া Logo কোটা বহালে হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে লিভ টু আপিল Logo সাতক্ষীরায় কোটা আন্দলনকারী ও ছাত্রলীগ মুখোমুখি অবস্থানে Logo বেনা‌পো‌লে ঘোষণা বহির্ভূত ১৫ হাজার ৭৫০ কেজি সালফিউরিক এসিড জব্দ Logo ‘বাবাকে হত্যা করেছি আমাকে গ্রেপ্তার করুন’ Logo সাতক্ষীরায় দুই রোহিঙ্গা নারীসহ মানব পাচারকারী আটক Logo প্রশ্নফাঁসে জড়িত কুমিল্লার সোহেলের বোন শিক্ষা অফিসার, ভাবি শিক্ষক
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01711 211241

খুনের সরঞ্জাম কিনে দিয়ে কলকাতা ছাড়েন শাহীন

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ০১:২১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার মূল্য পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন আনারকে হত্যায় কলকাতায় যাবতীয় কার্যক্রম আগে থেকেই সম্পন্ন করে রাখেন। আগে থেকেই তিনি সরঞ্জাম কিনে দেন। এরপর সেগুলো তিনি তার বেয়াই শিমুল ভূঁইয়াকে বুঝিয়ে দেন। শিমুল তার ভাড়াটে খুনি দিয়ে ‘কিলিং মিশন’ সম্পন্ন করেন। এরপর ‘কাট-আউট’ পদ্ধতি ব্যবহার করে লাশের টুকরো গায়েব করা হয়। আজিমকে হত্যার পর লাশের টুকরো করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একটি খালে ফেলা হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এমন তথ্য জানিয়েছেন। এমপি আনোয়ারুল আজিমকে হত্যায় শাহীনের সঙ্গে আরও কোনো রাঘববোয়াল আছে কি না তারও খোঁজ করছে তদন্তকারী দল। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত শাহীনের বাইরে প্রভাবশালী অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা আমরা পাইনি।

এদিকে এমপি আজিম হত্যায় জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজনকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারা হলেন– শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান, ফয়সাল আলী ওরফে সাজি ও সেলিস্তি রহমান। এর আগে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় গোয়েন্দাদের একটি প্রতিনিধি দল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। হত্যার সঙ্গে জড়িত সাতজনের মধ্যে চারজনকে এখনো সবাইকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জড়িতরা হলো– মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন, ভাড়াটে খুনি সিয়াম, ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। শাহীন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন বলে জানা যায়। ভোলার বাসিন্দা সিয়াম গত ১৭ মে ভারত থেকে নেপালে গেছেন। আর ফয়সাল-মোস্তাফিজের ব্যাপারে কিছু জানা যাচ্ছে না। তারা দুজই খুলনার বাসিন্দা এবং শাহীনের পরিচিত। হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদের নতুন পাসপোর্ট করে কলকাতায় নেওয়া হয়। মিশন শেষে তারা দেশে ফেরেন।

কলকাতার নিউটাউনে যে ফ্ল্যাটে এমপি আজিমকে হত্যা করা হয়, সেখানকার দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেছে। একটি ফুটেজে ১৩ মে দুপুরে এমপি আজিমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখা যায়। এ সময় তার পরনে ছিল কালো প্যান্ট ও সাদা শার্ট। হাতে ছিল কাগজপত্রসহ ফাইল। একই সময় অন্য দুজন ফ্ল্যাটে ঢোকেন। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের একজন হলেন শিমুল ভূঁইয়া ও অন্যজন ভাড়াটে কিলার ফয়সাল। অন্য একটি ফুটেজে ওইদিন বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে দুজনকে ফ্ল্যাট থেকে বের হতে দেখা যায়। তাদের একজনের হাতে ছিল একটি সবুজ রঙের বড় ট্রলিব্যাগ। আরেকজনের হাতে কয়েকটি পলিথিন ব্যাগ। তারা লিফটে নামেন। গোয়েন্দারা বলছেন, ওই ব্যাগে ছিল এমপির লাশের অংশ। ব্যাগ নিয়ে নামেন শিমুল ও আরেক ভাড়াটে কিলার জিহাদ।

গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসেন ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজিম। ১৩ মে রাতে তিনি নিউটাউনের ফ্ল্যাটে খুন হন। দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর তার হত্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। এ ঘটনার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশ থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার হয় জিহাদ ও সিয়াম নামে দুই ব্যক্তি। জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম আরও জানায় মুম্বাই থেকে কলকাতায় এসে কাজ শেষের পর বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তার।

পুলিশ জানায়, এমপি আনোয়ারুল আজিমের মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। হাড়, মাংস পৃথক করে হলুদ মাখিয়ে একেকটি টুকরো একেক জায়গার জলাশয়ে ফেলা হয়েছে। উল্লেখ্য, আনোয়ারুল আজিম আনার ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধুগঞ্জ বাজার এলাকায়। পেশায় ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম আনার আওয়ামী লীগের কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে পরপর তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সাতক্ষীরা থানায় হামলার চেষ্টা, পুলিশের লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি

খুনের সরঞ্জাম কিনে দিয়ে কলকাতা ছাড়েন শাহীন

আপডেট সময়: ০১:২১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার মূল্য পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন আনারকে হত্যায় কলকাতায় যাবতীয় কার্যক্রম আগে থেকেই সম্পন্ন করে রাখেন। আগে থেকেই তিনি সরঞ্জাম কিনে দেন। এরপর সেগুলো তিনি তার বেয়াই শিমুল ভূঁইয়াকে বুঝিয়ে দেন। শিমুল তার ভাড়াটে খুনি দিয়ে ‘কিলিং মিশন’ সম্পন্ন করেন। এরপর ‘কাট-আউট’ পদ্ধতি ব্যবহার করে লাশের টুকরো গায়েব করা হয়। আজিমকে হত্যার পর লাশের টুকরো করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একটি খালে ফেলা হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এমন তথ্য জানিয়েছেন। এমপি আনোয়ারুল আজিমকে হত্যায় শাহীনের সঙ্গে আরও কোনো রাঘববোয়াল আছে কি না তারও খোঁজ করছে তদন্তকারী দল। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত শাহীনের বাইরে প্রভাবশালী অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা আমরা পাইনি।

এদিকে এমপি আজিম হত্যায় জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজনকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারা হলেন– শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান, ফয়সাল আলী ওরফে সাজি ও সেলিস্তি রহমান। এর আগে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় গোয়েন্দাদের একটি প্রতিনিধি দল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। হত্যার সঙ্গে জড়িত সাতজনের মধ্যে চারজনকে এখনো সবাইকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জড়িতরা হলো– মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন, ভাড়াটে খুনি সিয়াম, ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। শাহীন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন বলে জানা যায়। ভোলার বাসিন্দা সিয়াম গত ১৭ মে ভারত থেকে নেপালে গেছেন। আর ফয়সাল-মোস্তাফিজের ব্যাপারে কিছু জানা যাচ্ছে না। তারা দুজই খুলনার বাসিন্দা এবং শাহীনের পরিচিত। হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদের নতুন পাসপোর্ট করে কলকাতায় নেওয়া হয়। মিশন শেষে তারা দেশে ফেরেন।

কলকাতার নিউটাউনে যে ফ্ল্যাটে এমপি আজিমকে হত্যা করা হয়, সেখানকার দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেছে। একটি ফুটেজে ১৩ মে দুপুরে এমপি আজিমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখা যায়। এ সময় তার পরনে ছিল কালো প্যান্ট ও সাদা শার্ট। হাতে ছিল কাগজপত্রসহ ফাইল। একই সময় অন্য দুজন ফ্ল্যাটে ঢোকেন। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের একজন হলেন শিমুল ভূঁইয়া ও অন্যজন ভাড়াটে কিলার ফয়সাল। অন্য একটি ফুটেজে ওইদিন বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে দুজনকে ফ্ল্যাট থেকে বের হতে দেখা যায়। তাদের একজনের হাতে ছিল একটি সবুজ রঙের বড় ট্রলিব্যাগ। আরেকজনের হাতে কয়েকটি পলিথিন ব্যাগ। তারা লিফটে নামেন। গোয়েন্দারা বলছেন, ওই ব্যাগে ছিল এমপির লাশের অংশ। ব্যাগ নিয়ে নামেন শিমুল ও আরেক ভাড়াটে কিলার জিহাদ।

গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসেন ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজিম। ১৩ মে রাতে তিনি নিউটাউনের ফ্ল্যাটে খুন হন। দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর তার হত্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ। এ ঘটনার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশ থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার হয় জিহাদ ও সিয়াম নামে দুই ব্যক্তি। জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম আরও জানায় মুম্বাই থেকে কলকাতায় এসে কাজ শেষের পর বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তার।

পুলিশ জানায়, এমপি আনোয়ারুল আজিমের মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। হাড়, মাংস পৃথক করে হলুদ মাখিয়ে একেকটি টুকরো একেক জায়গার জলাশয়ে ফেলা হয়েছে। উল্লেখ্য, আনোয়ারুল আজিম আনার ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধুগঞ্জ বাজার এলাকায়। পেশায় ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম আনার আওয়ামী লীগের কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে পরপর তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।