আজ শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
Logo সাতক্ষীরা থানায় হামলার চেষ্টা, পুলিশের লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি Logo যশোরে ডিবি পুলিশের অভিযানে পিস্তলসহ যুবক আটক Logo মোটরসাইকেল নিয়ে দ্বন্দ্বে ঘরে ঢুকে যুবককে গুলি করে হত্যা, গ্রেপ্তার ২ Logo সাতক্ষীরায় কোটা বিরোধীদের সাথে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া Logo কোটা বহালে হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে লিভ টু আপিল Logo সাতক্ষীরায় কোটা আন্দলনকারী ও ছাত্রলীগ মুখোমুখি অবস্থানে Logo বেনা‌পো‌লে ঘোষণা বহির্ভূত ১৫ হাজার ৭৫০ কেজি সালফিউরিক এসিড জব্দ Logo ‘বাবাকে হত্যা করেছি আমাকে গ্রেপ্তার করুন’ Logo সাতক্ষীরায় দুই রোহিঙ্গা নারীসহ মানব পাচারকারী আটক Logo প্রশ্নফাঁসে জড়িত কুমিল্লার সোহেলের বোন শিক্ষা অফিসার, ভাবি শিক্ষক
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01711 211241

কিম জং উনের চেয়েও ভয়ংকর নেতা আসছে উত্তর কোরিয়ায়

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ১২:২৪:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

কথার চেয়ে যেন মিসাইল ছুড়তেই বেশি পছন্দ করেন কিম জং উন। যার কথা ছাড়া গোটা উত্তর কোরিয়ার একটা ‘গাছের পাতাও’ নড়ে না। গোটা বিশ্বে এক নায়কের খেতাব কুড়িয়ে নিয়েছেন মাত্র ৪০ বছর বয়সেই। এখনই খোঁজা হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার পরবির্ত উত্তরসূরি কে? কার হাতে যাবে শাসন ব্যবস্থা, সে কতটা কঠোর হতে পারে দেশটির সাধারণ মানুষের জন্য? দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আলাদা হওয়ার পর তিন পুরুষের শাসন দেখেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির বর্তমান নেতা কিম জং উন, উত্তর কোরিয়ায় চালকের আসনে থাকলেও মনে করা হয়, পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে আরও একজন। তিনিও কিম পরিবারের সদস্য। তার নাম কিম ইয়ো জং। তিনি কিম জং উনের বোন। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বমঞ্চে উত্তর কোরিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন ইয়ো জং।

বাবা-দাদারা যে পথে হেঁটেছেন, কিম তার চেয়ে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। পশ্চিমা দেশে পড়াশোনা করা কিম, একটা বিষয় উপলব্ধি করতে পেরেছেন, ক্ষমতার একটা প্যারালাল কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে তিনি বোন ইয়ো জংকে উত্তর কোরিয়ার কার্যত ডেপুটি করে তুলেছেন। তবে এটা ভাবার কারণ নেই যে, ইয়ো জংয়ের নিজের কোনো যোগ্যতা নেই। বরং নিজের যোগ্যতা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক নারীর খেতাবও এনে দিয়েছে। কিম জং ইলের মৃত্যুর পর ভাই কিম জং উনের বিদেশ-মুখ হয়ে ধীরে ধীরে ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করেন ইয়ো জং। বয়স এখনও ৪০ পার হয়নি, কিন্তু অলিম্পিকে শত্রু দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সফর করেছেন রাশিয়াও। উত্তর কোরিয়ার হয়ে বহির্বিশ্বে ইয়ো জংয়ের এমন উপস্থিতিতে তার ক্ষমতা বলয় নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাকে যে হেলাফেলা করে দেখার সুযোগ নেই, সেটিও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

পশ্চিমা শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে থাকার কারণে উত্তর কোরিয়াকে আধুনিকতার কিছু ছোঁয়া দিয়েছেন কিম জং উন। সেই ধারাবাহিকতায় বোনকে ক্ষমতার সিঁড়িতে তুলেছেন তিনি। দ্য উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলার্সের একজন ফেলো সাং-ইয়ুন লি বলেন, ইয়ো জংকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি কোরিয়ার ইতিহাস, এমনকি সম্ভবত বিশ্ব ইতিহাসে সবচেয়ে বিপজ্জনক নারী। ইয়ো জং উত্তর কোরিয়ার ‘কার্যত উপপ্রধান’ হয়ে ওঠার গল্প নিয়ে ‘দ্য সিস্টার’ নামে একটি বইও লিখেছেন লি। ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসেন ইয়ো জং। তখন তার বাবা কিম জং ইলের সঙ্গে ইয়ো জংকে দেখা গিয়েছিল। এরপর বাবার মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করে ইয়ো জং। কয়েক মাস পর ভাইয়ের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের ঐতিহাসিক সামিটেও হাজির হন তিনি।

এরপরই মূলত বিশ্লেষকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন ইয়ো জং। বিশ্লেষকরা ইয়ো জংকে তার ভাইয়ের পর উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আবার এমনও হতে পারে, কিমের সন্তানরা বড় হওয়া পর্যন্ত, দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেবেন ইয়ো জং। কিম ও তার বোনের মধ্যে বোঝাপড়াটাও খুব দারুণ। ২০১৩ সালে নিজেদের আঙ্কেলকে হত্যায় ইয়ো জংয়ের ভূমিকা কোনো অংশে কম ছিল না। দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পর তার ভাই ও উত্তর কোরিয়া সরকারের হয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন ইয়ো জং। উত্তর কোরিয়া সরকারের অন্তত ৪০ লিখিত বিবৃতির কারিগরও তিনি। জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার সীমানায় জয়েন্ট লিয়াসন অফিস গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন ইয়ো জং। এমনকি উত্তর কোরিয়ায় একটিও গুলি ছোড়া হলে দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু বোমা মারার হুমকি দেন কিমের বোন।

ক্ষমতা সুসংহত করতে নিজের সৎভাইকে হত্যা করেছেন কিম জং উন। পথের কাঁটা মনে হলে, যে কাউকে যখন-তখন সরিয়ে দেন তিনি। এমতাবস্থায় একজন বিশ্বস্ত এবং ক্লিন ইমেজের মানুষ দরকার ছিল তার, সেই জায়গায় নিজের বোনের চেয়ে ভালো আর কে হতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা তখনও উপলব্ধি করতে পারেননি যে ইয়ো জং, আরেকজন লেডি কিম জং উন।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সাতক্ষীরা থানায় হামলার চেষ্টা, পুলিশের লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি

কিম জং উনের চেয়েও ভয়ংকর নেতা আসছে উত্তর কোরিয়ায়

আপডেট সময়: ১২:২৪:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

কথার চেয়ে যেন মিসাইল ছুড়তেই বেশি পছন্দ করেন কিম জং উন। যার কথা ছাড়া গোটা উত্তর কোরিয়ার একটা ‘গাছের পাতাও’ নড়ে না। গোটা বিশ্বে এক নায়কের খেতাব কুড়িয়ে নিয়েছেন মাত্র ৪০ বছর বয়সেই। এখনই খোঁজা হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার পরবির্ত উত্তরসূরি কে? কার হাতে যাবে শাসন ব্যবস্থা, সে কতটা কঠোর হতে পারে দেশটির সাধারণ মানুষের জন্য? দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আলাদা হওয়ার পর তিন পুরুষের শাসন দেখেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির বর্তমান নেতা কিম জং উন, উত্তর কোরিয়ায় চালকের আসনে থাকলেও মনে করা হয়, পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে আরও একজন। তিনিও কিম পরিবারের সদস্য। তার নাম কিম ইয়ো জং। তিনি কিম জং উনের বোন। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বমঞ্চে উত্তর কোরিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন ইয়ো জং।

বাবা-দাদারা যে পথে হেঁটেছেন, কিম তার চেয়ে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। পশ্চিমা দেশে পড়াশোনা করা কিম, একটা বিষয় উপলব্ধি করতে পেরেছেন, ক্ষমতার একটা প্যারালাল কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে তিনি বোন ইয়ো জংকে উত্তর কোরিয়ার কার্যত ডেপুটি করে তুলেছেন। তবে এটা ভাবার কারণ নেই যে, ইয়ো জংয়ের নিজের কোনো যোগ্যতা নেই। বরং নিজের যোগ্যতা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক নারীর খেতাবও এনে দিয়েছে। কিম জং ইলের মৃত্যুর পর ভাই কিম জং উনের বিদেশ-মুখ হয়ে ধীরে ধীরে ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করেন ইয়ো জং। বয়স এখনও ৪০ পার হয়নি, কিন্তু অলিম্পিকে শত্রু দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সফর করেছেন রাশিয়াও। উত্তর কোরিয়ার হয়ে বহির্বিশ্বে ইয়ো জংয়ের এমন উপস্থিতিতে তার ক্ষমতা বলয় নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাকে যে হেলাফেলা করে দেখার সুযোগ নেই, সেটিও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

পশ্চিমা শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে থাকার কারণে উত্তর কোরিয়াকে আধুনিকতার কিছু ছোঁয়া দিয়েছেন কিম জং উন। সেই ধারাবাহিকতায় বোনকে ক্ষমতার সিঁড়িতে তুলেছেন তিনি। দ্য উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলার্সের একজন ফেলো সাং-ইয়ুন লি বলেন, ইয়ো জংকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি কোরিয়ার ইতিহাস, এমনকি সম্ভবত বিশ্ব ইতিহাসে সবচেয়ে বিপজ্জনক নারী। ইয়ো জং উত্তর কোরিয়ার ‘কার্যত উপপ্রধান’ হয়ে ওঠার গল্প নিয়ে ‘দ্য সিস্টার’ নামে একটি বইও লিখেছেন লি। ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসেন ইয়ো জং। তখন তার বাবা কিম জং ইলের সঙ্গে ইয়ো জংকে দেখা গিয়েছিল। এরপর বাবার মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করে ইয়ো জং। কয়েক মাস পর ভাইয়ের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের ঐতিহাসিক সামিটেও হাজির হন তিনি।

এরপরই মূলত বিশ্লেষকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন ইয়ো জং। বিশ্লেষকরা ইয়ো জংকে তার ভাইয়ের পর উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আবার এমনও হতে পারে, কিমের সন্তানরা বড় হওয়া পর্যন্ত, দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেবেন ইয়ো জং। কিম ও তার বোনের মধ্যে বোঝাপড়াটাও খুব দারুণ। ২০১৩ সালে নিজেদের আঙ্কেলকে হত্যায় ইয়ো জংয়ের ভূমিকা কোনো অংশে কম ছিল না। দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পর তার ভাই ও উত্তর কোরিয়া সরকারের হয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন ইয়ো জং। উত্তর কোরিয়া সরকারের অন্তত ৪০ লিখিত বিবৃতির কারিগরও তিনি। জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার সীমানায় জয়েন্ট লিয়াসন অফিস গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন ইয়ো জং। এমনকি উত্তর কোরিয়ায় একটিও গুলি ছোড়া হলে দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু বোমা মারার হুমকি দেন কিমের বোন।

ক্ষমতা সুসংহত করতে নিজের সৎভাইকে হত্যা করেছেন কিম জং উন। পথের কাঁটা মনে হলে, যে কাউকে যখন-তখন সরিয়ে দেন তিনি। এমতাবস্থায় একজন বিশ্বস্ত এবং ক্লিন ইমেজের মানুষ দরকার ছিল তার, সেই জায়গায় নিজের বোনের চেয়ে ভালো আর কে হতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা তখনও উপলব্ধি করতে পারেননি যে ইয়ো জং, আরেকজন লেডি কিম জং উন।