বাউফলে আকস্মিক ঝড়ে রাতুল নামে এক কিশোর ও সুফিয়া বেগম নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দুই জেলে নিখোঁজ ও আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। ঝড়ে কয়েকশ বাড়িঘর ও গাছপালা তছনছ হয়ে গেছে। রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয় এ ঝড়। নিহত রাতুল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। আর সুফিয়া বেগম উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মৃত আহম্মেদ প্যাদার স্ত্রী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে অন্ধকার হয়ে যায় পুরো বাউফল। পরে হঠাৎ ঝড়ের সঙ্গে শীলা বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। বাউফলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত ও কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়ে। ঝড়ে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ইব্রাহিম ফরাজি এবং ইসমাইল রাঢ়ী নামে দুই জেলে নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক আলকাস মোল্লা। এ ছাড়া গোসিংগা গ্রামের আফসেরের গ্রেজ এলাকায় ঘরের ওপর গাছ পড়ে সাবিহা নামে এক নারী ও মেয়ে ইভা ও দুই বছর বয়সী শিশু গুরুতর আহত হয়েছেন। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে তার ছিঁড়ে গেছে। এতে বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। শীলা বৃষ্টিতে তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ঝড়ে ৩৩ কেবি মেইন লাইনের তার ছিঁড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, উপজেলার প্রায় সব এলাকাতেই বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ পড়ে আছে। ঈদের আগে শ্রমিক সংকট থাকায় কাজে কিছুটা বিলম্ব হবে। পৌর শহরে রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা কালবেলাকে বলেন, দুপুর ৩টা পর্যন্ত ১৭ জনকে বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এক কিশোরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ধারণা করছি, বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বশির গাজী বলেন, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।