আজ বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01971 211241

বেহাল অবস্থায় সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়ক, ভোগান্তিতে চার উপজেলার মানুষ

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ০৩:২৭:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
  • ৫৯ বার পড়া হয়েছে

প্রায় দীর্ঘ দুই যুগ ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত ৬২.৩২ কিলোমিটার সড়ক। দীর্ঘ এই সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক ছোট বড় দুর্ঘটনা। ফলে চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন জেলার চার উপজেলার মানুষ। একইসাথে বেড়েছে পণ্য পরিবহন ব্যয়।

সড়ক বিভাগ বলছে, ৮২২ কেটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও ঠিকাদার নির্বাচন না হওয়ায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার মধ্যে শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, দেবহাটা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মানুষ সরাসরি সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এছাড়া আশাশুনি উপজেলার একাংশের মানুষের যাতায়াতের রাস্তা এটি। সাতক্ষীরার এই সড়ক ধরেই জেলা শহরসহ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করেন এই পাঁচ উপজেলার মানুষ। বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য যেতে হয় এই সড়ক দিয়েই। অথচ গুরুত্বপুর্ণ এই সড়কটি গত প্রায় দুই যুগ ধরে সংস্কার করা হয়নি। মাঝে মাঝে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে পুডিং ও ইট ফেলে দায় সারছে সড়ক বিভাগ।

স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে সড়কটির অবস্থা এতোটাই খারাপ যে তা দিয়ে চলাচল করলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়ছে পণ্য পরিবহন। সাতক্ষীরা জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের শ্লোগান ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ, সড়কপথে সুন্দরবন’। কিন্তু সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের বেহাল দশার কারণে জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের এ শ্লোগান ভুলতে বসেছেন মানুষ। কারণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের সুন্দরবনে আসতে উৎসাহ হারাচ্ছেন পর্যটকরা। এতে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনের উপর নির্ভরশীল উপকীলীয় এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকায়। একইসঙ্গে ব্যহত সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের চলাচল ও রসদ সরবরাহে।

এ প্রসঙ্গে শ্যামনগরের সাবেক প্রকৌশলী শেখ আফজাল হোসেন বলেন, সাতক্ষীরাই বাংলাদেশের একমাত্র জেলা যেখানে সড়কপথে সুন্দরবন উপভোগ করা সম্ভব। কিন্তু সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের যে নাজুক ও জরাজীর্ণ অবস্থা তাতে এখানে আর পর্যটকরা আসতে চান না।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা শহরে আসতে সময় লাগে সাড়ে চার ঘণ্টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা। আর সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ আসতে সময় লাগে চার ঘণ্টা। তারপর বাসে বা অন্য কোন পরিবহনে আসতে গেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়া শ্যামনগরের কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরায় নিতে তার জীবন প্রায় শেষ হয়ে যায়। অনেক রোগী পথেই মারা যায়। তিনি সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান।

কালিগঞ্জের নবিননগর গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা খাতুন বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ডাক্তার দেখাতে প্রায় সাতক্ষীরা শহরে যেতে হয়। কিন্তু এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়। একবার সাতক্ষীরায় গেলে বাড়ি ফিরে এসে ২/৩ দিন বিশ্রামে থাকতে হয়।

দেবহাটা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী আলফেরদৌস আলফা বলেন, বর্তমানে সড়কটির বিভিন্ন অংশে পিচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। অল্প বৃষ্টিতে গর্তগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়কে চলাচলকারীরা। তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরায় প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরে মাছের সাথে রয়েছে কাঁকড়ার ঘের। এসব পণ্য জেলার বাইরে পাঠাতে বা কোনো কিছু বাইরের জেলা থেকে আনতে চাইলে ট্রাকচালকরা এই সড়কের কথা শুনলে আসতে রাজি হয় না। ফলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে যানবাহন ভাড়া নিতে হয়। এতে করে ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়েছে।

তবে সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগ বলছে, সড়কটি উন্নয়নে বিগত সরকারের সময় সাতক্ষীরা-সখিপুর এবং কালিগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়/ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে মোট ৬ টি প্যাকেজে ৬২ দশমিক ৩২৫ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নে ৮২২ কোটি ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল দরপত্র আহবান করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১ আগষ্ট ২০২৩ থেকে ৩০ জুন ২০২৬ সাল পর্যন্ত। দরপত্র গ্রহণের পর ঠিকাদার নির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়নি। যে কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার করা হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর ২০০০ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান গুলো মেরামত করা হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চলাচল উপযোগী রাখতে সেসময় কিছু কিছু স্থানে হেরিংবন্ড করা হয়। এছাড়া মাঝে মাঝে সওজ নিজ উদ্যোগে কিছু অংশ পুডিং করে মেরামত করে রাখার চেষ্টা অব্যহত রেখেছে।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ বলেন, সড়কটির ছোটখাটো মেরামতের জন্য ২০০০ সালে ১৮ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা থেকে কালিগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার চারলেন ও কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার ২৪ ফুট প্রস্থ রেখে ২০২৩ সালে একটি প্রকল্পের খসড় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ৮২২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল।

তিনি আরও বলেন, দরপত্র অনুমোদন করে সিএস (কনট্রাক্টর সিলেকশন) এর জন্য গত জুলাই মাসে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো সিএস অনুমোদন হয়ে আসেনি। গত চার মাস মন্ত্রণালয়ে এ কাজের দরপত্রগুলো অনুমোদনের জন্য আটকে রয়েছে। দ্রুত যদি অনুমোদন না হয় আর ঠিকাদার না আসে তাহলে আমাদের পক্ষে এই মুহুর্তে সড়কটি মেরামত করা সম্ভব হবে না।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

বেহাল অবস্থায় সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়ক, ভোগান্তিতে চার উপজেলার মানুষ

আপডেট সময়: ০৩:২৭:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রায় দীর্ঘ দুই যুগ ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত ৬২.৩২ কিলোমিটার সড়ক। দীর্ঘ এই সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক ছোট বড় দুর্ঘটনা। ফলে চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন জেলার চার উপজেলার মানুষ। একইসাথে বেড়েছে পণ্য পরিবহন ব্যয়।

সড়ক বিভাগ বলছে, ৮২২ কেটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও ঠিকাদার নির্বাচন না হওয়ায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার মধ্যে শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, দেবহাটা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মানুষ সরাসরি সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এছাড়া আশাশুনি উপজেলার একাংশের মানুষের যাতায়াতের রাস্তা এটি। সাতক্ষীরার এই সড়ক ধরেই জেলা শহরসহ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করেন এই পাঁচ উপজেলার মানুষ। বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য যেতে হয় এই সড়ক দিয়েই। অথচ গুরুত্বপুর্ণ এই সড়কটি গত প্রায় দুই যুগ ধরে সংস্কার করা হয়নি। মাঝে মাঝে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে পুডিং ও ইট ফেলে দায় সারছে সড়ক বিভাগ।

স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে সড়কটির অবস্থা এতোটাই খারাপ যে তা দিয়ে চলাচল করলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়ছে পণ্য পরিবহন। সাতক্ষীরা জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের শ্লোগান ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ, সড়কপথে সুন্দরবন’। কিন্তু সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের বেহাল দশার কারণে জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের এ শ্লোগান ভুলতে বসেছেন মানুষ। কারণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের সুন্দরবনে আসতে উৎসাহ হারাচ্ছেন পর্যটকরা। এতে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনের উপর নির্ভরশীল উপকীলীয় এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকায়। একইসঙ্গে ব্যহত সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের চলাচল ও রসদ সরবরাহে।

এ প্রসঙ্গে শ্যামনগরের সাবেক প্রকৌশলী শেখ আফজাল হোসেন বলেন, সাতক্ষীরাই বাংলাদেশের একমাত্র জেলা যেখানে সড়কপথে সুন্দরবন উপভোগ করা সম্ভব। কিন্তু সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের যে নাজুক ও জরাজীর্ণ অবস্থা তাতে এখানে আর পর্যটকরা আসতে চান না।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা শহরে আসতে সময় লাগে সাড়ে চার ঘণ্টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা। আর সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ আসতে সময় লাগে চার ঘণ্টা। তারপর বাসে বা অন্য কোন পরিবহনে আসতে গেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়া শ্যামনগরের কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরায় নিতে তার জীবন প্রায় শেষ হয়ে যায়। অনেক রোগী পথেই মারা যায়। তিনি সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান।

কালিগঞ্জের নবিননগর গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা খাতুন বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ডাক্তার দেখাতে প্রায় সাতক্ষীরা শহরে যেতে হয়। কিন্তু এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়। একবার সাতক্ষীরায় গেলে বাড়ি ফিরে এসে ২/৩ দিন বিশ্রামে থাকতে হয়।

দেবহাটা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী আলফেরদৌস আলফা বলেন, বর্তমানে সড়কটির বিভিন্ন অংশে পিচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। অল্প বৃষ্টিতে গর্তগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়কে চলাচলকারীরা। তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরায় প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরে মাছের সাথে রয়েছে কাঁকড়ার ঘের। এসব পণ্য জেলার বাইরে পাঠাতে বা কোনো কিছু বাইরের জেলা থেকে আনতে চাইলে ট্রাকচালকরা এই সড়কের কথা শুনলে আসতে রাজি হয় না। ফলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে যানবাহন ভাড়া নিতে হয়। এতে করে ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়েছে।

তবে সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগ বলছে, সড়কটি উন্নয়নে বিগত সরকারের সময় সাতক্ষীরা-সখিপুর এবং কালিগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়/ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে মোট ৬ টি প্যাকেজে ৬২ দশমিক ৩২৫ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নে ৮২২ কোটি ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল দরপত্র আহবান করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১ আগষ্ট ২০২৩ থেকে ৩০ জুন ২০২৬ সাল পর্যন্ত। দরপত্র গ্রহণের পর ঠিকাদার নির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়নি। যে কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার করা হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর ২০০০ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান গুলো মেরামত করা হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চলাচল উপযোগী রাখতে সেসময় কিছু কিছু স্থানে হেরিংবন্ড করা হয়। এছাড়া মাঝে মাঝে সওজ নিজ উদ্যোগে কিছু অংশ পুডিং করে মেরামত করে রাখার চেষ্টা অব্যহত রেখেছে।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ বলেন, সড়কটির ছোটখাটো মেরামতের জন্য ২০০০ সালে ১৮ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা থেকে কালিগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার চারলেন ও কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার ২৪ ফুট প্রস্থ রেখে ২০২৩ সালে একটি প্রকল্পের খসড় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ৮২২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল।

তিনি আরও বলেন, দরপত্র অনুমোদন করে সিএস (কনট্রাক্টর সিলেকশন) এর জন্য গত জুলাই মাসে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো সিএস অনুমোদন হয়ে আসেনি। গত চার মাস মন্ত্রণালয়ে এ কাজের দরপত্রগুলো অনুমোদনের জন্য আটকে রয়েছে। দ্রুত যদি অনুমোদন না হয় আর ঠিকাদার না আসে তাহলে আমাদের পক্ষে এই মুহুর্তে সড়কটি মেরামত করা সম্ভব হবে না।