সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে পুলিশ কর্মকর্তার ভাই ও বাবাকে জিম্মি করে নগদ প্রায় ছয় লাখ টাকা, তিন ভরি স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল ফোন, ব্যাংকের চেকসহ প্রায় ছয় লাখ টাকার মূল্যের মালামাল লুট করা হয়। শনিবার (০১ জুন) রাত ২টার দিকে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের বানিয়াবাহু গ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা সেলিম রেজা চৌধুরীর বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর আগে একই ইউনিয়নের শাকই গ্রামে শফিকুল ইসলামের বাড়িতে অপর ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। ডাকাতিকালে ডাকাতের ছুরি আঘাতে পুলিশ কর্মকর্তার বড় ভাই ও বাবা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. আব্দুল হাই চৌধুরি (৬৮) ও ডাকাত দলের মারপিটে তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন চৌধুরী (৫৫) আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনু।
সেলিম রেজা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার সাবেক ওসি। তার ছেলে হুমায়ুন রশিদ পুলিশের এএসআই। ডাকাতদের মারপিটে তার বড় ভাই সাবেক ইউপি সচিব আব্দুল হাই চৌধুরী আহত হয়েছেন। পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আহত আব্দুল হাই চৌধুরীর স্ত্রী মোছা. মাজেদা খাতুন বলেন, সেলিম রেজা ও তার ছেলে হুমায়ুন রশিদ চাকরির সুবাদে বাইরে অবস্থান করায় গ্রামের বাড়িতে তিনি ও তার স্বামী থাকেন। শনিবার রাত ৩টার দিকে বাড়ির উত্তর দিকে টয়লেটের পাশের টিনের বেড়া ভেঙে বাড়ির ভেতরে ঢোকে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল। এরপর ঘরের জানালার গ্রিল কেটে ঘরের ভেতরে ঢুকে আমাকে ও আমার স্বামীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে তারা। ডাকাতরা আমার স্বামীর দুই হাঁটুতে এবং পেছনে উপর্যুপরি আঘাত করে। একপর্যায়ে বাড়ির আলমারি, লেপকাঁথা রাখা বক্স ভাঙে এবং বাড়ি থেকে নগদ ৬ লাখ নগদ টাকা ও ১ ভরি পরিমাণ স্বর্ণের দুল নিয়ে ডাকাতরা চলে যায়।
অপরদিকে শাকই গ্রামের শফিকুল ইসলামের বাড়ির গেটের তালা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢোকে। এরপর বিষাক্ত গ্যাস স্প্রে করে তাদের অজ্ঞান করার পর নগদ ৮০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। সকালে প্রতিবেশীরা শফিকুলের স্ত্রী ময়না (৪২), ছেলে মনিরুল ইসলাম (২৪), মাসুদ রানাকে (১৮) অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাড়াশ থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম জানান, শনিবার পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে ফ্রিজ মেরামত করতে আসে ইলেকট্রিক শ্রমিক। সে ফ্রিজের কোনো খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে রেখে যায়। রাতে ফ্রিজ যে রুমে রাখা হয় সেই রুমের জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে লুট করে দুবৃত্তরা। শফিকুলের বাড়িতেও একই ধরনের চেতনানাশক মিশিয়ে অজ্ঞান করে লুট করা হয়েছে। ওই পরিবারের সবাই এখনো ঘুমিয়ে রয়েছে। তারা ঘুম থেকে উঠলে বিষয়টি জানা যাবে। আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।