নতুন বছরের শুরুতেই হাজির হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। চলতি মাসেই একগুচ্ছ শৈত্যপ্রবাহের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এর মধ্যে কয়েকটি মাঝারি এবং দুএকটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ রয়েছে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বৃষ্টির শঙ্কাও রয়েছে।
গতকাল বুধবার (০১ জানুয়ারি) মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দু-একটি মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে দু-তিনটি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, চলতি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব, পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা এবং অন্যান্য অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। কুয়াশা পরিস্থিতি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘনকুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
ধেয়ে আসছে তীব্র শীত, দফায় দফায় শৈত্যপ্রবাহ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় জড়োসড়ো সিরাজগঞ্জ আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত কয়েকবারের তুলনায় এবার জানুয়ারিজুড়ে শীত বেশি পড়বে। তাপমাত্রা নামতে পারে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, জানুয়ারিতে একটি থেকে ৩টি মৃদু থেকে মাঝারি এবং একটি থেকে দুটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা কমে এলেও রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, সিলেট বিভাগে ঠান্ডার অনুভূতি বাড়বে বুধবার থেকে। ধীরে ধীরে মধ্যাঞ্চল হয়ে দেশের পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত এর বিস্তার হতে পারে।
শৈত্যপ্রবাহ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এটা শুক্রবার পর্যন্ত থাকতে পারে। আগামী কয়েকদিন কুয়াশার ব্যাপ্তিও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরা হিমেল হাওয়ার প্রভাবও বাড়তে থাকবে। পুরো মাসজুড়েই শীতের অনুভূতি বেশি থাকবে।
বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
এদিকে আজ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পাশাপাশি উত্তরীয় ঠান্ডা বাতাস বয়ে চলার কারণে তীব্র শীতে জড়োসড়ো যমুনাপাড়ের জেলা সিরাজগঞ্জ।
বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সকাল থেকেই কুয়াশার চাদরে ঢাকা সিরাজগঞ্জ। ঘনকুয়াশায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কসহ জেলার সব রুটে ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। দুপুর গড়িয়েও কুয়াশা কিছুটা কমলেও দেখা মেলেনি সূর্যের। তবে সকাল থেকেই উত্তরীয় হিমেল বাতাস বইছে। ফলে প্রচন্ড শীতে কাঁপছে সিরাজগঞ্জ।
সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে দিন এনে দিন খাওয়া কর্মজীবী মানুষগুলো। রিকশাচালক, কৃষি শ্রমিক, মাটিকাটা শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, ফুটপাতের দোকানিরা স্বাভাবিকভাবে তাদের কাজকর্ম করতে পারছে না।
শাহজাদপুর বাঘাবাড়ি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানান, বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে এইটা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, উত্তরীয় শীতল বাতাস বয়ে চলার কারণে একটু বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। তাছাড়া সিরাজগঞ্জ নদী ও বিল অঞ্চল হওয়ায় ঘন কুয়াশা একটু বেশি থাকে। তবে এখন পর্যন্ত এখানে শৈত্যপ্রবাহ নেই। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত আবহাওয়া এমনটা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।