আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01971 211241

বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ০৮:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির আকার বাড়ছে। আর তাতে ভর করে ২০২৫ সালে বিশ্বের ৩৬তম বড় অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। আগামী বছর বাংলাদেশের জিডিপির আকার বেড়ে দাঁড়াবে ৪৮১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি ১৯০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ সম্পর্কে এ তথ্য উঠে এসেছে। তালিকার শীর্ষ ৪০ দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার শুধু ভারত ও বাংলাদেশ রয়েছে। আইএমএফের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে কানাডার গণমাধ্যম ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট গত ১৯ ডিসেম্বর এ তালিকা প্রকাশ করেছে। দেশগুলোর জিডিপির নিরিখেই এটি করা হয়েছে।

৪৬৫ বিলিয়ন ডলার জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) নিয়ে ২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৫তম। এর আগের বছর এই অবস্থান ছিল ৪১, সে সময় বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৩৯৭ বিলিয়ন ডলার।

একটি দেশের ভেতর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি বড় নির্ণায়ক জিডিপি। একটি দেশে, একটি নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি ও বেসরকারি খাতের পুরো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের (পণ্য ও পরিষেবা- সবই) মোট মূল্য উঠে আসে জিডিপিতে।

‘দ্য ১১৫ ট্রিলিয়ন ডলার ওয়ার্ল্ড ইকোনমি ইন এ চার্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ ভারত বিশ্ব অর্থনীতিতে পঞ্চম স্থানে চলে এসেছে। ৪ দশমিক ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপি নিয়ে যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে পঞ্চম স্থান দখল করে নিয়েছে ভারত।

তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও জার্মানি। দেশ চারটির জিডিপি যথাক্রমে ৩০ দশমিক ৩৩, ১৯ দশমিক ৫৩, ৪ দশমিক ৯২ ও ৪ দশমিক শূন্য ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার।

বিশ্বের ১০টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের বাকি দেশগুলো হচ্ছে যথাক্রমে ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা ও ব্রাজিল। দেশ পাঁচটির জিডিপি যথাক্রমে ৪ দশমিক ২৭, ৩ দশমিক ৭৩, ৩ দশমিক ২৮, ২ দশমিক ৪৫, ২ দশমিক ৩৩ ও ২ দশমিক ৩০ ট্রিলিয়ন ডলার।

তালিকায় বাংলাদেশের আগের তিনটি অবস্থানে আছে নরওয়ে (৩৩তম), ভিয়েতনাম (৩৪তম) ও মালয়েশিয়া (৩৫তম)। আর বাংলাদেশের ঠিক পরেই আছে ইরান (৩৭তম), ডেনমার্ক (৩৮তম) ও সিঙ্গাপুর (৩৯তম)।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালিকার শীর্ষ দুটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এক সঙ্গে বিশ্বের ১১৫ ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপির ৪৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে তার সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গত তিন দশকের ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির কারণে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের হবে ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতি এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে এর অর্থনৈতিক পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যাবে বলে আশা করা যায়।

তিনি বলেন, দেশকে এখন দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, সুশাসন এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে।

অর্থনীতিবিরা বলছেন, বড় অর্থনীতির দেশ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা বাংলাদেশের আছে। আগামী ১৫ বছর ৭ শতাংশ বা এর বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনও সম্ভব। কিন্তু এগুলো শুধু সংখ্যাগত তথ্য-উপাত্ত। কীভাবে সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে, সেটা বিবেচনায় আনতে হবে। এ জন্য বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে যোগাযোগব্যবস্থা, জ্বালানিসহ অবকাঠামো দ্রুত করতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচনে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে। এসব না হলে যেসব সংখ্যার কথা বলা হচ্ছে, তা শুধু সংখ্যাই থাকবে।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ

আপডেট সময়: ০৮:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির আকার বাড়ছে। আর তাতে ভর করে ২০২৫ সালে বিশ্বের ৩৬তম বড় অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। আগামী বছর বাংলাদেশের জিডিপির আকার বেড়ে দাঁড়াবে ৪৮১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি ১৯০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ সম্পর্কে এ তথ্য উঠে এসেছে। তালিকার শীর্ষ ৪০ দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার শুধু ভারত ও বাংলাদেশ রয়েছে। আইএমএফের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে কানাডার গণমাধ্যম ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট গত ১৯ ডিসেম্বর এ তালিকা প্রকাশ করেছে। দেশগুলোর জিডিপির নিরিখেই এটি করা হয়েছে।

৪৬৫ বিলিয়ন ডলার জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) নিয়ে ২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৫তম। এর আগের বছর এই অবস্থান ছিল ৪১, সে সময় বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৩৯৭ বিলিয়ন ডলার।

একটি দেশের ভেতর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি বড় নির্ণায়ক জিডিপি। একটি দেশে, একটি নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি ও বেসরকারি খাতের পুরো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের (পণ্য ও পরিষেবা- সবই) মোট মূল্য উঠে আসে জিডিপিতে।

‘দ্য ১১৫ ট্রিলিয়ন ডলার ওয়ার্ল্ড ইকোনমি ইন এ চার্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ ভারত বিশ্ব অর্থনীতিতে পঞ্চম স্থানে চলে এসেছে। ৪ দশমিক ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপি নিয়ে যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে পঞ্চম স্থান দখল করে নিয়েছে ভারত।

তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও জার্মানি। দেশ চারটির জিডিপি যথাক্রমে ৩০ দশমিক ৩৩, ১৯ দশমিক ৫৩, ৪ দশমিক ৯২ ও ৪ দশমিক শূন্য ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার।

বিশ্বের ১০টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের বাকি দেশগুলো হচ্ছে যথাক্রমে ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা ও ব্রাজিল। দেশ পাঁচটির জিডিপি যথাক্রমে ৪ দশমিক ২৭, ৩ দশমিক ৭৩, ৩ দশমিক ২৮, ২ দশমিক ৪৫, ২ দশমিক ৩৩ ও ২ দশমিক ৩০ ট্রিলিয়ন ডলার।

তালিকায় বাংলাদেশের আগের তিনটি অবস্থানে আছে নরওয়ে (৩৩তম), ভিয়েতনাম (৩৪তম) ও মালয়েশিয়া (৩৫তম)। আর বাংলাদেশের ঠিক পরেই আছে ইরান (৩৭তম), ডেনমার্ক (৩৮তম) ও সিঙ্গাপুর (৩৯তম)।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালিকার শীর্ষ দুটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এক সঙ্গে বিশ্বের ১১৫ ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপির ৪৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে তার সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গত তিন দশকের ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির কারণে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের হবে ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতি এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে এর অর্থনৈতিক পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যাবে বলে আশা করা যায়।

তিনি বলেন, দেশকে এখন দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, সুশাসন এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে।

অর্থনীতিবিরা বলছেন, বড় অর্থনীতির দেশ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা বাংলাদেশের আছে। আগামী ১৫ বছর ৭ শতাংশ বা এর বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনও সম্ভব। কিন্তু এগুলো শুধু সংখ্যাগত তথ্য-উপাত্ত। কীভাবে সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে, সেটা বিবেচনায় আনতে হবে। এ জন্য বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে যোগাযোগব্যবস্থা, জ্বালানিসহ অবকাঠামো দ্রুত করতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচনে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে। এসব না হলে যেসব সংখ্যার কথা বলা হচ্ছে, তা শুধু সংখ্যাই থাকবে।