আজ বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
Logo জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস Logo কলারোয়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ Logo স্থানীয় সরকারের সাথে লবি মিটিং Logo আকবর আলী ফাউন্ডেশন ও সার্বিক গ্রাম উন্নয়নের উদ‍্যোগে কম্বল বিতরণ Logo সাতক্ষীরার নবাগত জেলা ও দায়রা জজকে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের শুভেচ্ছা Logo মেডিকেলে থাকছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, যাচাই-বাছাই ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত Logo গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ট্রাম্পের Logo সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আয়কর নথি জব্দের আদেশ Logo দেশের ৬৮ ভাগ বাস-ট্রাকের চালক কানে শোনেন না: পরিবেশ উপদেষ্টা Logo ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসানে চুক্তি করতে চান জেলেনস্কি: ট্রাম্প
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01971 211241

জনবসতি এলাকার কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলন, পরিবশে ঝুঁকিতে

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ০২:৪১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ভামিয়া-পোড়াকাটলা এলাকা কৃষি জমির পাশ থেকে বোরিং করে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় তিন প্রভাবশালী শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকাল থেকে জনবসতির মধ্যভাগের এলাকায় বোরিং করে বালু উত্তোলন শুরু করেন বলে জানা গেছে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হওয়ায় বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। তাদের দাবি, যত্রতত্র বালু উত্তোলনে বিধি-নিষেধ থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালীরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বালু তুলছেন।

জনবসতি এলাকার কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন জিন্নাত আলী ও আবিয়ার নামের স্থানীয় এক যুবদল নেতা। তিনি শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা ও বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ভাগ্নে বলে জানা গেছে।অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকৃত এলাকা পোড়াকাটলা গ্রামের সুধাংশু মন্ডল জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে শুক্রবার বিকাল থেকে দু’টি মেশিন ব্যবহার করে পোড়াকাটলা দিপায়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনের জমি থেকে বালু উত্তোলন শুরু হয়। অনাদী বিশ্বাস নামের স্থানীয় এক ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধার প্রলোভনে ফেলে এই বালু উত্তোলন চলছে।

স্থানীয় আইয়ুব আলী সরদার নামের এক ব্যক্তি জানান, বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা স্থানীয়ভাবে খুবই প্রভাবশালী। ফলে নির্দিষ্ট বালুমহাল থেকে সংগ্রহ না করে জনবসতির মধ্যভাগের কৃষি জমি থেকে বোরিং করে বালু তোলা হচ্ছে। এভাবে বালু তোলার কারণে স্থানীয়রা ভাঙন আতংকের কথা শোনাচ্ছেন বলেও দাবি আইয়ুব আলীর। রুস্তম আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ভাড়াটে জনবলসহ বোরিং মেশিন ও বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদী খাগড়াঘাট এলাকা থেকে আনা হয়েছে। কৃষি জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলনে কারনে তারা ভীতিকর অবস্থার মধ্যে পড়ার শংকায় ভুগছেন। তিনি আরও বলেন উত্তোলনকৃত বালু দিয়ে বর্তমানে ৩৫নং ভামিয়া পোড়াকাটলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুর ভরাটের কাজ চলছে।

পরবর্তীতে সিন্ডিকেটটি একই অংশের ভু-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে পার্শ্ববর্তী দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজে সরবরাহের চুক্তি সম্পন্ন করেছে। বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের দুর্গাবাটি গ্রামের ভুপতি মন্ডলের বাড়ি হতে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কে ওই বালু ব্যবহার হবে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় প্রভবাশালীরা বালু উত্তোলন করছে। গ্রামবাসীর আপত্তি আমলে না নিয়ে বরং বাধাদানকারিদেরকে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। এলাকার ভাঙনরোধসহ জীব ও প্রাণবৈচিত্র্র্য রক্ষার স্বার্থে তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে বুড়িগোয়ালীনির ৯নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা আবিয়ার জানান, বালু তোলার ব্যাপারে এসি ল্যান্ড, ইউএনও, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ আছে। নির্দেশের কাগজ দেখতে চাইলে ‘বালু তোলা বন্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই’ জানিয়ে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছন্ন করে দেন।

বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম বালু উত্তোলনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জনস্বার্থে স্বল্প পরিসরে বালু উত্তোলন করা যাবে। এবিষয় আমার কাছে পরিপত্র আছে। স্থানীয় একটি স্কুলের পাঁচতলা ভবন নির্মাণের জন্য এই বালু তোলা হচ্ছে। বিষয়টি শ্যামনগরের সাবেক ইউএনও, এসিল্যান্ড ও জেলা প্রশাসকের নলেজে দেয়া আছে। স্থানীয় আইয়ুব আলী নামের এক ব্যক্তি অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আবিয়ার আমার ভাগ্নে একং জিন্নাত দুরসর্ম্পকের আত্মীয়। তারা গরীব মানুষ বিধায় কিছু টাকা রোজগার করার জন্য বালু তোলার দায়িত্বটা তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন ইউএনও বালু তোলার কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছেন। তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনি খাতুন জানান, বালু মহালের বাইরে কোন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করার অনুমতি কারও নেই। এধরনের কোন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

জনবসতি এলাকার কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলন, পরিবশে ঝুঁকিতে

আপডেট সময়: ০২:৪১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ভামিয়া-পোড়াকাটলা এলাকা কৃষি জমির পাশ থেকে বোরিং করে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় তিন প্রভাবশালী শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকাল থেকে জনবসতির মধ্যভাগের এলাকায় বোরিং করে বালু উত্তোলন শুরু করেন বলে জানা গেছে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হওয়ায় বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। তাদের দাবি, যত্রতত্র বালু উত্তোলনে বিধি-নিষেধ থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালীরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বালু তুলছেন।

জনবসতি এলাকার কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন জিন্নাত আলী ও আবিয়ার নামের স্থানীয় এক যুবদল নেতা। তিনি শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা ও বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ভাগ্নে বলে জানা গেছে।অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকৃত এলাকা পোড়াকাটলা গ্রামের সুধাংশু মন্ডল জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে শুক্রবার বিকাল থেকে দু’টি মেশিন ব্যবহার করে পোড়াকাটলা দিপায়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনের জমি থেকে বালু উত্তোলন শুরু হয়। অনাদী বিশ্বাস নামের স্থানীয় এক ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধার প্রলোভনে ফেলে এই বালু উত্তোলন চলছে।

স্থানীয় আইয়ুব আলী সরদার নামের এক ব্যক্তি জানান, বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা স্থানীয়ভাবে খুবই প্রভাবশালী। ফলে নির্দিষ্ট বালুমহাল থেকে সংগ্রহ না করে জনবসতির মধ্যভাগের কৃষি জমি থেকে বোরিং করে বালু তোলা হচ্ছে। এভাবে বালু তোলার কারণে স্থানীয়রা ভাঙন আতংকের কথা শোনাচ্ছেন বলেও দাবি আইয়ুব আলীর। রুস্তম আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ভাড়াটে জনবলসহ বোরিং মেশিন ও বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদী খাগড়াঘাট এলাকা থেকে আনা হয়েছে। কৃষি জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলনে কারনে তারা ভীতিকর অবস্থার মধ্যে পড়ার শংকায় ভুগছেন। তিনি আরও বলেন উত্তোলনকৃত বালু দিয়ে বর্তমানে ৩৫নং ভামিয়া পোড়াকাটলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুর ভরাটের কাজ চলছে।

পরবর্তীতে সিন্ডিকেটটি একই অংশের ভু-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে পার্শ্ববর্তী দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজে সরবরাহের চুক্তি সম্পন্ন করেছে। বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের দুর্গাবাটি গ্রামের ভুপতি মন্ডলের বাড়ি হতে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কে ওই বালু ব্যবহার হবে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় প্রভবাশালীরা বালু উত্তোলন করছে। গ্রামবাসীর আপত্তি আমলে না নিয়ে বরং বাধাদানকারিদেরকে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। এলাকার ভাঙনরোধসহ জীব ও প্রাণবৈচিত্র্র্য রক্ষার স্বার্থে তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে বুড়িগোয়ালীনির ৯নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা আবিয়ার জানান, বালু তোলার ব্যাপারে এসি ল্যান্ড, ইউএনও, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ আছে। নির্দেশের কাগজ দেখতে চাইলে ‘বালু তোলা বন্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই’ জানিয়ে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছন্ন করে দেন।

বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম বালু উত্তোলনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জনস্বার্থে স্বল্প পরিসরে বালু উত্তোলন করা যাবে। এবিষয় আমার কাছে পরিপত্র আছে। স্থানীয় একটি স্কুলের পাঁচতলা ভবন নির্মাণের জন্য এই বালু তোলা হচ্ছে। বিষয়টি শ্যামনগরের সাবেক ইউএনও, এসিল্যান্ড ও জেলা প্রশাসকের নলেজে দেয়া আছে। স্থানীয় আইয়ুব আলী নামের এক ব্যক্তি অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আবিয়ার আমার ভাগ্নে একং জিন্নাত দুরসর্ম্পকের আত্মীয়। তারা গরীব মানুষ বিধায় কিছু টাকা রোজগার করার জন্য বালু তোলার দায়িত্বটা তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন ইউএনও বালু তোলার কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছেন। তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনি খাতুন জানান, বালু মহালের বাইরে কোন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করার অনুমতি কারও নেই। এধরনের কোন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।