আব্দুর রহমান: সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসরকারি স্কুল ও কলেজের ফি নির্ধারণের একটি নীতিমালা জারি করেছে। এই নীতিমালার মাধ্যমে এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে সরকার। এতে স্কুল ও কলেজগুলো মহানগর, জেলা সদর, পৌরসভা, উপজেলা সদর ও মফস্সলভিত্তিক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করে বেতন ছাড়া অন্যান্য খাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ধার্য করা হয়েছে। এ পদক্ষেপটি শিক্ষাব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে এবং অতিরিক্ত ফি আদায় রোধ করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, মহানগরের স্কুলগুলোর ফি নির্ধারণ করবে মহানগর কমিটি এবং জেলা সদর ও উপজেলার জন্য দায়িত্ব পালন করবে জেলা কমিটি। এই কমিটিগুলোকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বেতন নির্ধারণ করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। নীতিমালা ২০২৪ অনুযায়ী মহানগরের এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো বছরে সর্বোচ্চ ২,৪৬৫ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে ফি নিতে পারবে। অন্যদিকে, মফস্সলের এমপিওভুক্ত স্কুলগুলোর জন্য তা ১,৪০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নন-এমপিও স্কুল ও কলেজের ক্ষেত্রে ফি কিছুটা বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
কলেজ পর্যায়ে এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলোতেও একইভাবে মহানগর, জেলা সদর, উপজেলা এবং মফস্সলভিত্তিক ক্যাটাগরিতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। মহানগরের এমপিওভুক্ত কলেজে এক শিক্ষার্থী বছরে ৩,৬৬০ টাকা পর্যন্ত অন্যান্য খাতে দিতে পারবে, আর মফস্সলের এমপিওভুক্ত কলেজে তা ১,৬৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে, নন-এমপিও কলেজগুলোর জন্য ফি তুলনামূলকভাবে বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই নীতিমালার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ফি ব্যবস্থাপনা সহজ হবে এবং তা খাতভিত্তিক ব্যয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেতন এবং অন্যান্য ফি তফসিলি ব্যাংকের নির্দিষ্ট হিসাবে জমা রাখতে হবে এবং তা নির্দিষ্ট খাত ছাড়া অন্য কোথাও ব্যয় করা যাবে না। এছাড়া, প্রতিবছর অক্টোবরে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রতিনিধি নির্বাচন করে, নভেম্বরের মধ্যে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের জন্য মাসিক বেতন নির্ধারণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও ফি নিয়ে অযথা জটিলতা এড়ানোর জন্য সরকারের এ পদক্ষেপকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করা যায়। তবে এর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের ওপর আর্থিক চাপ না পড়ে এবং শিক্ষার মান বজায় থাকে।