আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01971 211241

মেরামত করা সম্ভব হয়েছে বেতনা নদীর পাউবো’র বেড়িবাঁধের ভাঙন পয়েন্ট

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ১২:১৭:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

অবশেষে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকায় শ্মশানঘাটের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ভেঙে যাওয়া বেতনা নদীর বেড়িবাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। টানা তিনদিন ধরে কাজ করার পর শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ভাঙন পয়েন্ট দিয়ে লোকালয়ে নদীর পানি ঢোকা বন্ধ করা হয়েছে।সাতক্ষীরা  পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকোৗশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে ও অতিবৃষ্টিতে সাতক্ষীরা সদর ও তালা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের পঞ্চাশের অধিক গ্রাম কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। ভেসে গেছে ছয় হাজার মৎস্যঘের ও দেড় হাজার পুকুর। একই সাথে তলিয়ে গেছে শতশত বিঘা আমন ধানের ক্ষেত। বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার শ্মশানঘাটের পাশের বেতনা নদীর পাউবোর বেড়িবাঁধ উপচে রোববার সন্ধ্যা থেকে লোকালয়ে পানি ঢোকা শুরু করে। এসময় বাধের উপর বালির বস্তা দিয়ে পানি ঢোকা বন্ধ করার চেষ্টা চালায় পাউবো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একপর্যায় সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভেঙে যায় ওই বেড়িবাঁধ। ভেঙে যাওয়া বাঁধ দিয়ে প্রবল বেগে বেতনার পানি ঢুকে আহসাননগর, হরিণখোলা, গোয়ালপোতা, গাছা, দক্ষিণ নগরঘাটা, হাজরাতলা, পালপাড়া, গাবতলা, দোলুয়া, নগরঘাটা, রথখোলা, কাপাসডাঙ্গা, বিনেরপোতা, খেজুরডাঙ্গা, গোপীনাথপুর, তালতলা, নিমতলাসহ ৫০ এর অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ে।

তালা উপজেলার হাজরাতলা গ্রামের কবীর হোসেন, দক্ষিণ নগরঘাটা গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম, রথখোলা গ্রামের আরিফ হোসেন ও আবদুর রহমান জানান, তাঁদের বাড়ির আঙিনায় হাঁটুসমান পানি। আশপাশের ৫০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি থেমে গেলেও বেতনা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা দিয়ে পানি ঢুকছে। বৃষ্টিতে হাজরাতলা গ্রামের জিয়াদ আলী মোড়ল (৫৫), আবদুর রকিব গাজীসহ (৫০) কয়েকজনের কাঁচা ঘর পড়ে গেছে।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য বিভাগের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, ৪ হাজার ৭৮২ হেক্টর আয়তনের ৫ হাজার ৭২১টি মাছের ঘের ও ৭৯৭ হেক্টর আয়তনের ১হাজার ৮২৩টি পুকুর-দিঘি তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ঘের ও পুকুরের মাছ, স্লুইসগেটসহ সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ২হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের তোড়ে সাতক্ষীরা বেতনা নদীর বেনেরপোতা এলাকার বাঁধের ২৫ মিটার পড়ে। বেতনা নদীর পাউবোর বেড়িবাঁধ উপচে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে লোকালয়ে পানি ঢোকা শুরু করে। এসময় বাঁধের উপর বালির বস্তা দিয়ে পানি ঢোকা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওই বাঁধ ভেঙে যায়। ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে আমরা ভাঙন পয়েন্টে বড় গাছ দিয়ে বল্লি বসানো শুরু করি। টানা তিনদিন ধরে কাজ করার পর শনিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ফাইনালি বাঁধের ভাঙন পয়েন্টটি আটকানো সম্ভব হয়েছে।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বাড়তে পারে ঈদ ও পূজার ছুটি

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

মেরামত করা সম্ভব হয়েছে বেতনা নদীর পাউবো’র বেড়িবাঁধের ভাঙন পয়েন্ট

আপডেট সময়: ১২:১৭:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অবশেষে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকায় শ্মশানঘাটের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ভেঙে যাওয়া বেতনা নদীর বেড়িবাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। টানা তিনদিন ধরে কাজ করার পর শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ভাঙন পয়েন্ট দিয়ে লোকালয়ে নদীর পানি ঢোকা বন্ধ করা হয়েছে।সাতক্ষীরা  পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকোৗশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে ও অতিবৃষ্টিতে সাতক্ষীরা সদর ও তালা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের পঞ্চাশের অধিক গ্রাম কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। ভেসে গেছে ছয় হাজার মৎস্যঘের ও দেড় হাজার পুকুর। একই সাথে তলিয়ে গেছে শতশত বিঘা আমন ধানের ক্ষেত। বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার শ্মশানঘাটের পাশের বেতনা নদীর পাউবোর বেড়িবাঁধ উপচে রোববার সন্ধ্যা থেকে লোকালয়ে পানি ঢোকা শুরু করে। এসময় বাধের উপর বালির বস্তা দিয়ে পানি ঢোকা বন্ধ করার চেষ্টা চালায় পাউবো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একপর্যায় সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভেঙে যায় ওই বেড়িবাঁধ। ভেঙে যাওয়া বাঁধ দিয়ে প্রবল বেগে বেতনার পানি ঢুকে আহসাননগর, হরিণখোলা, গোয়ালপোতা, গাছা, দক্ষিণ নগরঘাটা, হাজরাতলা, পালপাড়া, গাবতলা, দোলুয়া, নগরঘাটা, রথখোলা, কাপাসডাঙ্গা, বিনেরপোতা, খেজুরডাঙ্গা, গোপীনাথপুর, তালতলা, নিমতলাসহ ৫০ এর অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ে।

তালা উপজেলার হাজরাতলা গ্রামের কবীর হোসেন, দক্ষিণ নগরঘাটা গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম, রথখোলা গ্রামের আরিফ হোসেন ও আবদুর রহমান জানান, তাঁদের বাড়ির আঙিনায় হাঁটুসমান পানি। আশপাশের ৫০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি থেমে গেলেও বেতনা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা দিয়ে পানি ঢুকছে। বৃষ্টিতে হাজরাতলা গ্রামের জিয়াদ আলী মোড়ল (৫৫), আবদুর রকিব গাজীসহ (৫০) কয়েকজনের কাঁচা ঘর পড়ে গেছে।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য বিভাগের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, ৪ হাজার ৭৮২ হেক্টর আয়তনের ৫ হাজার ৭২১টি মাছের ঘের ও ৭৯৭ হেক্টর আয়তনের ১হাজার ৮২৩টি পুকুর-দিঘি তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ঘের ও পুকুরের মাছ, স্লুইসগেটসহ সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ২হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের তোড়ে সাতক্ষীরা বেতনা নদীর বেনেরপোতা এলাকার বাঁধের ২৫ মিটার পড়ে। বেতনা নদীর পাউবোর বেড়িবাঁধ উপচে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে লোকালয়ে পানি ঢোকা শুরু করে। এসময় বাঁধের উপর বালির বস্তা দিয়ে পানি ঢোকা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওই বাঁধ ভেঙে যায়। ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে আমরা ভাঙন পয়েন্টে বড় গাছ দিয়ে বল্লি বসানো শুরু করি। টানা তিনদিন ধরে কাজ করার পর শনিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ফাইনালি বাঁধের ভাঙন পয়েন্টটি আটকানো সম্ভব হয়েছে।