শোয়েব বশিরের বলটা সীমানা ছাড়া করে আবেগ চেপে রাখতে পারলেন না সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিশাঙ্কা। অন্য প্রান্ত থেকে এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। শ্রীলঙ্কার ডাগআউটে তখন রাজ্যের উচ্ছ্বাস। অধিনায়ক ডি সিলভার সঙ্গে করমর্দন করে ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম যেন বলে গেলেন, যোগ্য হিসেবেই জিতেছো। গ্যালারিতে মুহুর্মুহু করতালির শব্দ। দ্য ওভালের দিনটা যেন শ্রীলঙ্কাময়। আরেকটি অবিস্মরণীয় জয়ের সাক্ষী হলো লঙ্কান ক্রিকেট।
২০১৪ সালের পর ইংল্যান্ডকে টেস্ট ক্রিকেটে হারের স্বাদ দিলো শ্রীলঙ্কা। সেটিও আবার প্রতিপক্ষের দুর্গে গিয়ে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। অথচ প্রথম দুই টেস্ট হেরে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় ছিল লঙ্কানরা। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৩২৫ রানের জবাবে ২৬৩ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। এতে প্রথম ইনিংসে ৬২ রানে লিড পায় ইংল্যান্ড। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কান পেসারদের তোপের মুখে ১৫৬ রানেই থামে স্বাগতিকরা। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে ২১৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে তারা। ১২৪ বলে ১২৭ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। অন্য প্রান্তে ৬১ বলে ৩২ রানে টিকে ছিলেন ম্যাথিউস।
তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার পর তৃতীয় তথা শেষ টেস্টে চতুর্থ দিনের শুরুতেই হারল ইংল্যান্ড। স্বাগতিকদের বিপর্যয়ের শুরু দ্বিতীয় ইনিংসে। ৬২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কার চার পেসার লাহিরু কুমারা, বিশ্ব ফার্নান্দো, আসিথা ফার্নান্দো ও মিলান রত্ননায়েকের তোপে মাত্র ৮২ রানের ব্যবধানে ৭ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এসময় সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন ওপেনার ড্যানে লরেন্স। অষ্টম উইকেটে ওলি স্টোনকে নিয়ে ৪৪ বলে ৫৮ রান করেন উইকেটরক্ষক জেমি স্মিথ। এরমধ্যে স্মিথের সংগ্রহ ছিল ১৯ বলে ৫২ রান।
দলীয় ১৪০ রানে স্মিথকে বিদায় দেন বিশ্ব। এরপর ১৫৬ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি সর্বনিম্ন স্কোর ইংল্যান্ডের। ওভালের এই ভেন্যুতেই ১৯৯৮ সালে ১৮১ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। ঐ ম্যাচ ১০ উইকেটে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫০ বলে ৬৭ রান করেন স্মিথ। কুমারা ৪টি, বিশ্ব ৩টি, আসিথা ২টি ও রত্ননায়েকে ১টি উইকেট নেন।
২১৯ রানের টার্গেটে ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিসের মারমুখী ব্যাটিংয়ে তৃতীয় দিনের শেষ ভাগে ১৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৯৪ রান তুলেছিল শ্রীলংকা। ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ৮ রানে ফিরলেও, ৭টি চারে নিশাঙ্কা ৪৪ বলে ৫৩ এবং কুশল ৬টি বাউন্ডারিতে ২৫ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। চতুর্থ দিন তথা আজ সহজ সমীকরণ নিয়েই মাঠে নামে সফরকারীরা। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে বাকি দু’দিনে আরও ১২৫ রান করতে হতো লঙ্কানদের। হাতে উইকেট ৯টি। আর এক উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা।