জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়টি উপদেষ্টা মন্ডলীর বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আত্মোৎসর্গকারীদের উদ্দেশ্যে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের প্রজ্ঞাপন তারা প্রস্তুত রেখেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মঙ্গলবারই (১৩ আগস্ট) প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
এর আগে সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আজ বিকেলে ১৫ আগস্টের ছুটির বিষয়ে আমরা আলোচনা করব। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এদিকে দেশের ক্রিয়াশীল ৩৪টি ছাত্র সংগঠন ১৫ই আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার ঘোষণা দিয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে এই সভা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সভায় অংশ নেন। ছাত্রলীগ ও ছাত্রসমাজের কোনো প্রতিনিধি সভায় ছিলেন না।
বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে সংহত করতে আগামী একমাস ক্যাম্পাসগুলোতে কোনো ছাত্র সংগঠন আলাদা করে কোনো কর্মসূচি দেবে না। আন্দোলনের ব্যানারে তারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। এ সময় ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ১৫ই আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উপস্থিত সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি এসব সিদ্ধান্তের সঙ্গে লিখিতভাবে একমত পোষণ করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১৫ই আগস্টকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকে রূপান্তর করা হয়েছে। এই দিনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পুনরায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ডের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাই জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা ও অভ্যুত্থান সংহত করতে ১৫ই আগস্টকে রাষ্ট্রীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করাটা সমীচীন নয়। নেতৃবৃন্দ জুলাই-আগস্টকে বাংলাদেশের জনগণের শোক, সংহতি ও প্রতিরোধের মাস হিসেবে উল্লেখ করেন।
সভায় উপস্থিত ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবির, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (রাগিব নাঈম), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (মুক্তি কাউন্সিল), বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (ইউপিডিএফ), বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (জেএসএস), বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ (নুর), বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ, ছাত্র আন্দোলন (এনডিএম), বিপ্লবী ছাত্রসংহতি, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ (রেজা কিবরিয়া), বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র মজলিস, গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম-মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী জাফর), জাগপা ছাত্রলীগ (খন্দকার লুৎফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র সমাজ, বাংলাদেশ ছাত্র মজলিস, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্রসমাজ, বাংলাদেশ ছাত্রমিশন, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল এবং জুম লিটারেচার সোসাইটি।