আজ মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01971 211241

ধরা খেলে দালাল, নইলে ব্যবসায়ী!

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ০১:১৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও ল্যাব ব্যবসায়ীদের বেশি আনাগোনা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যন্ত ছুটোছুটি তাদের। হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিলে তা বাগিয়ে নিজেদের ল্যাবে নিয়ে করান তারা। এই কাজে ল্যাব কর্তৃপক্ষ রোগী হিসাব করে দেন টাকা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর তারা হয়ে যায় দালাল। অপরদিকে তাদের পেছনের মানুষ বরাবরের মতোই থেকে যায় অধরা। নেওয়া হয় না কোনো ব্যবস্থাও। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) দালাল পরিচয়ে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন সবাই ব্যবসায়ী। তবে তাদের পরিচালনাকারী থেকে যায় আড়ালে। জামিনে এসে আবার আগের কাজে জড়ায়। তাদের টার্গেটে থাকে রোগীর স্বজনরা। সুযোগ বুঝে তাদের ভুলভাল বুঝিয়ে নিজেদের কবজায় নেয়। তাদের কার্যক্রম হাসপাতালে প্রকাশ্যেই চলে। চেনেও সবাই। হাসপাতালে কর্মরতরাও ধোয়া তুলশী পাতা নন। তারা ও ল্যাব ব্যবসায়ীদের থেকে কমিশন পায়। বেশি কম হলে ব্যবসায়ীরা হয়ে যায় দালাল।

পুলিশের দাবি, দালালরা রোগীর স্বজনদের ভুল বুঝিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে বাগানোর সঙ্গে জড়িত। এমনকি তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পছন্দের ল্যাবে করানোর জন্য রোগী বাগিয়ে নেয়। অথচ সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কম খরচে চমেক হাসপাতালে করার সুযোগ আছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ৫ দালালকে আটকের পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন আনসার সদস্যরা। তারা হলেন- কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন চৌমুহনী এলাকার আব্দুল রশিদের ছেলে আবু কালাম (৩২), রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া পূর্ব চৌধুরী হাট এলাকার মাহবুবুর রহমানের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৫), বোয়ালখালী উপজেলার গোমদণ্ডী ফুলতলা এলাকার আবু তাহেরের ছেলে গোলাম কিবরিয়া (২৪), রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গৌরাঙ্গ সিংহের ছেলে সুজন সিংহ (৩৯) ও সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের নুরুল হকের ছেলে আব্দুল আউয়াল (৩১)।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালে কর্মরতরা কালবেলাকে জানান, গ্রেপ্তার পাঁচজন বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করেন। রোগীদের ভুল বুঝিয়ে বাগিয়ে নেন নিজেদের ল্যাবে। চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক বলেন, আটককৃতরা বিভিন্ন হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ভুল বুঝিয়ে তাদের নির্ধারিত ল্যাবে নিয়ে হয়রানি এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে থাকেন। আনসার সদস্যরা তাদের হাতেনাতে মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঁচ দালালকে আটক করা হয়। চলতি বছর ২১ মার্চে চমেক হাসপাতাল থেকে ৩৮ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। তারা সবাই হাসপাতালের আশপাশের ল্যাব, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ওষুধের দোকানের দালাল বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ধরা খেলে দালাল, নইলে ব্যবসায়ী!

আপডেট সময়: ০১:১৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও ল্যাব ব্যবসায়ীদের বেশি আনাগোনা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যন্ত ছুটোছুটি তাদের। হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিলে তা বাগিয়ে নিজেদের ল্যাবে নিয়ে করান তারা। এই কাজে ল্যাব কর্তৃপক্ষ রোগী হিসাব করে দেন টাকা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর তারা হয়ে যায় দালাল। অপরদিকে তাদের পেছনের মানুষ বরাবরের মতোই থেকে যায় অধরা। নেওয়া হয় না কোনো ব্যবস্থাও। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) দালাল পরিচয়ে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন সবাই ব্যবসায়ী। তবে তাদের পরিচালনাকারী থেকে যায় আড়ালে। জামিনে এসে আবার আগের কাজে জড়ায়। তাদের টার্গেটে থাকে রোগীর স্বজনরা। সুযোগ বুঝে তাদের ভুলভাল বুঝিয়ে নিজেদের কবজায় নেয়। তাদের কার্যক্রম হাসপাতালে প্রকাশ্যেই চলে। চেনেও সবাই। হাসপাতালে কর্মরতরাও ধোয়া তুলশী পাতা নন। তারা ও ল্যাব ব্যবসায়ীদের থেকে কমিশন পায়। বেশি কম হলে ব্যবসায়ীরা হয়ে যায় দালাল।

পুলিশের দাবি, দালালরা রোগীর স্বজনদের ভুল বুঝিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে বাগানোর সঙ্গে জড়িত। এমনকি তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পছন্দের ল্যাবে করানোর জন্য রোগী বাগিয়ে নেয়। অথচ সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কম খরচে চমেক হাসপাতালে করার সুযোগ আছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ৫ দালালকে আটকের পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন আনসার সদস্যরা। তারা হলেন- কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন চৌমুহনী এলাকার আব্দুল রশিদের ছেলে আবু কালাম (৩২), রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া পূর্ব চৌধুরী হাট এলাকার মাহবুবুর রহমানের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৫), বোয়ালখালী উপজেলার গোমদণ্ডী ফুলতলা এলাকার আবু তাহেরের ছেলে গোলাম কিবরিয়া (২৪), রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গৌরাঙ্গ সিংহের ছেলে সুজন সিংহ (৩৯) ও সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের নুরুল হকের ছেলে আব্দুল আউয়াল (৩১)।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালে কর্মরতরা কালবেলাকে জানান, গ্রেপ্তার পাঁচজন বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করেন। রোগীদের ভুল বুঝিয়ে বাগিয়ে নেন নিজেদের ল্যাবে। চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক বলেন, আটককৃতরা বিভিন্ন হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ভুল বুঝিয়ে তাদের নির্ধারিত ল্যাবে নিয়ে হয়রানি এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে থাকেন। আনসার সদস্যরা তাদের হাতেনাতে মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঁচ দালালকে আটক করা হয়। চলতি বছর ২১ মার্চে চমেক হাসপাতাল থেকে ৩৮ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। তারা সবাই হাসপাতালের আশপাশের ল্যাব, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ওষুধের দোকানের দালাল বলে জানিয়েছে র‍্যাব।