কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের মামলায় রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ এবং ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে অব্যাহতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলীর আদালত বাদীর নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তাদের অব্যাহতির আদেশ দেন।
এর আগে ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন। পরে মামলার তথ্যগত ভুল উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। পরে গত ১৪ মার্চ আদালত বাদীর নারাজির আবেদন গ্রহণ করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে পিবিআইও তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এ প্রতিবেদনেও নারাজি দাখিল করলে গত ১৩ জুন শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য ৪ জুলাই দিন ধার্য রাখেন আদালত।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসত এবং ভিকটিমকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনত। খোঁজখবর নেওয়ার নামে আসামি ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতো। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেয়। ভিকটিম এরকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। অধ্যক্ষ ব্যবস্থা করার কথা বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভিকটিমকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষের কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি। বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করতে থাকেন। গত ১২ জুন ভিকটিমকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছে এবং যৌন নিপীড়ন করছে।