সাতক্ষীরায় ভাঙান মাছ চাষ পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা সোমবার (১০ জুন) শহরের আল-বারাকা শপিং কমপ্লেক্সের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, খুলনা বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিছুর রহমান, কালিগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা, সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের উপ-পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ভিজুয়াল প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গৌতম কুমার। গবেষণা সহযোগী ছিলেন অপর্ণা বর্মণ, আসিফ হাসান। গবেষণা সহকারী ছিলেন, ইসমাম ইবনে হায়দার ও জাফরুল ইসলাম।
বক্তরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় এবং অধিকতর মৎস্য উৎপাদনের চাহিদা পূরণের জন্য বাংলাদেশে জলবায়ু সহিষ্ণু অধিক উৎপাদনশীল মৎস্য চাষ পদ্ধতি অপরিহার্য। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত পানির ঘের, পুকুরে বাগদা চিংড়ির সাথে অন্যান্য মাছ যেমন, পারশে, টেংরা, ভেটকি, তেলাপিয়া, খল্লা ইত্যাদি চাষ হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসুমে পানির লবণাক্ততা কমে গেলে অন্যান্য স্বাদু পানির প্রজাতি যেমন, গলদা চিংড়ি, রুই, গ্রাস কার্প, মিরর কার্প, কাতলা, ইত্যাদি চাষ হয়। মাঝারি লবণাক্ত ঘেরগুলোতে বড় সাদা মাছ হিসেবে অন্যান্য মাছের সাথে ভেটকি মাছের চাষ হয়। কিন্তু ভেটকি খুব রাক্ষুসে স্বভাবের এবং এর উৎপাদন খরচ অনেক বেশি (এফসিআর ৩ এর বেশি) হওয়ায় খামারিরা বিকল্প খুঁজছে। ভাঙান এক্ষেত্রে একটি কার্যকারী বিকল্প হতে পারে।
বক্তারা আরো বলেন, ভাঙান একটি অত্যান্ত সুস্বাদু এবং দামী মাছ যা মূলত উপকূলীয় উন্মুক্ত জলাশয় থেকে আহরণ করা হয়। যদিও বর্তমানে কিছু খামারি বাগদা চিংড়ি ঘেরে এটি চাষ শুরু করেছেন। কিন্তু উদ্যোক্তা বা খামারিদের ভাঙান মাছের চাষ পদ্ধতি, ব্যবস্থাপনা ও এর আয়-ব্যয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষাপটে। এ সময় ভাঙান মাছ চাষ পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এসময় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
তারা আরো বলেন, উপকূলীয় এলাকায় চিড়িং চাষ হচ্ছে। এর পাশাপাশি ভাঙান, ভেটকি চাষে উদ্ভূদ্ধ করতে সরকার কাছ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে পুকুরের মিষ্টি পানিতে ভাঙন চাষ করছে। লবণ পানি অভিশাপ নয় আশিবাদ। লবণ পানিকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হবে। ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে যেমনি লাভবান হচ্ছে তেমনি ভাইরাস মুক্ত থাকছে। একই সাথে ভাঙান মাছ চাষ করেও চাষীরা লাভবান হচ্ছেন।