সাতক্ষীরা শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ শহিদ রীমু সরণীর পোস্ট অফিস মোড় হতে পুরাতন সাতক্ষীরা পর্যন্ত সড়ক পুনঃনির্মাণের দাবীতে ২ ঘন্টার প্রতীকী সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি। রোববার (২ জুন ২০২৪) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শহিদ রীমু চত্বরে অনুষ্ঠিত অবরোধ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল। অবরোধ কর্মসূচি থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে সড়ক পুনঃনির্মাণের আল্টিমেটাম দেওয়া হয় এবং আগামী ২ জুলাই সাতক্ষীরা পৌরসভায় অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
প্রতীকী সড়ক অবরোধ কর্মসূচির বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রচীন পৌরসভা তথা সাবেক মিউনিসিপালিটিগুলোর মধ্যে অন্যতম সাতক্ষীরা। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও যশোরের পর ১৮৬৯ সালে এই সাতক্ষীরা মিউনিসিপালিটি প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু ১৫৫ বছরের এই পৌরসভা তার ঐতিহ্য হারিয়ে এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে অনুন্নত পৌরসভায় পরিণত হতে চলেছে। বিদেশী প্রকল্পের কথা বলে গত কয়েক দশক শহরের রাস্তাঘাট ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের তেমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না।
গত চার দশকে পৌর এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ শহিদ রীমু সরণীর পোস্ট অফিস মোড় হতে পুরাতন সাতক্ষীরা পর্যন্ত সড়কটি ব্যবহার উপযোগী করতে পুনঃনির্মাণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে সড়কটি জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগীতা হারাতে বসেছে।
এই সড়কের বেহালদশা নিয়ে সংসদে বক্তব্য দিয়েছিলেন সাতক্ষীরা-২ আসনের (সদর) সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান। গত ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে বক্তব্যটি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। ওই বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ সড়কটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী ওই রাস্তায় চলাচল করলে পথেই ‘ডেলিভারি’ (সন্তান প্রসব) হয়ে যাবে।
এব্যাপারে গত ৮ মে ২০২৪ সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে সড়কটি পুনরায় নির্মাণ করার দাবী জানানো হয়। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কটি নির্মাণে দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম শুরু করেনি।
বক্তারা আরো বলেন, নূন্যতম নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত সাতক্ষীরার জনগন। বর্ষা হলেই এলাকায় এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এবং কয়েক মাস ধরে হাজার হাজার মানুষ পানির মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হয়। গ্রামে এখন আর মাটির রাস্তা খুজে পাওয়া না গেলেও সাতক্ষীরা শহরে এখনো হাটু কাদা ঠেলে মানুষকে পথ চলতে হয়। বক্তারা বলেন, যানজট শহরবাসীর নিত্যসঙ্গী। কিন্ত তা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ নেই। বক্তারা সাতক্ষীরা পৌরসভার বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা সমাধানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
অবরোধে বক্তব্য রাখেন জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ, অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, শেখ হারুণ অর রশিদ, শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু, কমরেড আবুল হোসেন, নিত্যানন্দ সরকার, মাধব চন্দ্র দত্ত, এড. আল মাহামুদ পলাশ, এড. মুনির উদ্দীন, সাংবাদিক আব্দুল বারী, আবুল কাশেম, অধ্যাপক ইদ্রিশ আলী, শেখ মুশফিকুর রহমান মিল্টন, শেখ সিদ্দিকুর রহমান, রবিউল ইসলাম রবি, মুনসুর রহমান, সুরেশ পান্ডে, আব্দুস সামাদ, তামান্না খাতুন, সাকিব হাসান, সানজিদা জেসমিন প্রমুখ।