রেকর্ড ২০ দলের অংশগ্রহণে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে আগামী ১ জুন (বাংলাদেশ সময় ২ জুন) মাঠে গড়বে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। এ জন্য বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া ১৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে ভিডিও সিরিজ ‘দ্য গ্রিন রেড স্টোরি’ নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বুধবারের (২৯) পর্বে তুলে ধরা হয় টাইগার দলপতি নাজমুল হোসেন শান্তর গল্প। বিশ্বকাপ নিয়ে তার চিন্তা-ভাবনা, সম্ভাবনা ওঠে এসেছে লাল-সবুজের এ গল্পে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বাংলাদেশের পারপরম্যান্স তুলনামূলক খারাপ। তাই হয় তো এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা তিনি বলতে চাইলেন না। প্রশ্নকর্তাকে নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘সম্ভাবনা আমি বলতেই চাই না। কারণ আপনিও চান বাংলাদেশ শিরোপা জিতুক। খেলোয়াড়রাও চায় বাংলাদেশ দল কাপ জিতুক। এটাই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রস্তুতিটা ঠিকমতো নিয়েছি কি না, ছোট ছোট কাজগুলো করছি কি না, প্রক্রিয়াটা ঠিক আছে কি না… এই জিনিসগুলো যদি আমরা ঠিকভাবে করতে পারি, প্রতিটি ম্যাচে আমাদের শক্তি অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে ফল আসবেই। তাই ফল নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই। ছোট ছোট জিনিসগুলো যেন আমরা ঠিক করতে পারি, এটা নিয়ে বেশি মনোযোগী।’
গত বছর ভারতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। সে সময়ে মূলত ছিলেন সহঅধিনায়কের দায়িত্বে। পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো বিশ্ব আসরে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অন্যদের মতো তিনিও গর্বিত, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা। তারপর যদি বিশ্বকাপের মতো আসরে এ ধরনের সুযোগ আসে, তাহলে সেটি অনেক গর্বের ব্যাপার।’ অধিনায়কের বাড়তি চাপ থাকা স্বাভাবিক। বিশ্বের অনেক নামি-দামি ক্রিকেটার সেই চাপে ভুগেছেন। দায়িত্ব বেড়ে গেলেও অধিনায়কত্বটা উপভোগ করতে চান শান্ত, ‘এ সময়টা উপভোগ করতে চাই। দলের জন্য প্রতিদিন কিছু না কিছু করতে চাই। যে দায়িত্ব আছে, সেটা ঠিকভাবে পালন করতে চাই। অধিনায়ক হওয়ায় দায়িত্ব বেড়ে গেছে—এভাবেও ভাবতে চাই না। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে চাই। প্রতিদিন দলকে যেন কিছু একটা দিতে পারি, এটাই মূল লক্ষ্য থাকবে।’ অধিনায়ক হিসেবে দলের জন্য বাড়তি কিছু করার তাগিদ রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে টানেন টাইগার দলপতি। শান্ত বলেন, ‘আলাদাভাবে যদি বলেন, আমি বলব যে সাকিব ভাই (সাকিব আল হাসান) তার অভিজ্ঞতা সব ক্রিকেটারের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। তিনি গত বছরগুলোয় যে যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে, সেসব তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিলে তারা অনেক উপকৃত হবে এবং এরই মধ্যে সেটা তিনি করছেন।’
অভিজ্ঞদের কাছ থেকে বাড়তি প্রত্যাশা নাজমুল হোসেন শান্তর। টানা নবম বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন সাকিব। আর ২০২২ সালের আসর বাদ দিলে বাকি ৮ম বিশ্বকাপে খেলতে নামবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যা বাংলাদেশের জন্য বাড়তি পাওয়া বলছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, ‘এটা অনেক বড় প্লাস পয়েন্ট মনে হয় আমার কাছে। এমন ক্রিকেটার যখন দলে থাকে, বিশেষ করে যারা তরুণ, অনেকেই আছে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবেন—তাদের জন্য অনেক অনুপ্রেরণা দেবে মনে হয়। পাশাপাশি তাদের তো অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতাও আছে। আশা করি কঠিন সময়ে কোনো সাহায্য দরকার হলে তারা করবেন এবং এখন সেটাই করছেন। আমি আশা করি বিশ্বকাপে এর ব্যতিক্রম হবে না।’ এ সময় নাজমুল হোসেন শান্ত জানান, দল হিসেবে অনেক ভালো করাই তার লক্ষ্য, ‘আমরা যদি ছোট ছোট বিষয়গুলো সামলাতে পারি, তাহলে সম্ভবত ভালো ফল পাব।’
এবারের ২০ দলের আসরে গ্রুপ-ডিতে রয়েছে বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ হিসেবে টাইগাররা পাচ্ছে নেপাল, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কাকে। ডালাসে ৮ জুন লঙ্কানদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। ১০ জুন দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ প্রোটিয়ারা। এরপর বাংলাদেশ যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ১৩ জুন নেদারল্যান্ডস ও ১৭ জুন নেপালের মুখোমুখি হবে টাইগাররা।