সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে-অপরের সঙ্গে পরিচয়। এরপর এক বছরের বেশি সময় প্রেম, অতঃপর বিয়ে। তবে বিয়ের পর স্বামী জানতে পারলেন, তার স্ত্রী আসলে নারী নয়, পুরুষ! অবিশ্বাস্য হলেও এমনই বিরল ঘটনার মুখোমুখী হয়েছেন এক যুবক। বিয়ের ১২ দিনের মাথায় ২৬ বছর বয়সী স্বামী জানতে পারলেন, তিনি নারী নয় বরং একজন পুরুষকে বিয়ে করেছেন। পুলিশের কাছে ওই স্বামী অভিযোগ করেছেন, ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে তার হবু বউয়ের সঙ্গে পরিচয়। তারপর শুরু হয় কথাবার্তা। এগিয়ে যায় সম্পর্ক। শুরু হয় ভালো লাগা। সেই ভালো লাগা যে কখন ভালোবাসায় রূপ নেয় তা তিনিও জানেন না। তবে ভালোবাসা যত বাড়ে, তত একে অন্যকে কাছে পেতে ইচ্ছে হয়। ওই যুবক আরও জানান, তারা একে-অপরকে ভালোবেসে ফেলেন। দীর্ঘ ১ বছরেরও বেশি সময় তারা ডেট করেছেন। তবে ওই তরুণী সবসময় ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পোশাক পরতেন এবং দেখা হলে তার পুরো মুখ ঢেকে রাখতেন। প্রেমের এই তীব্র আকাঙ্ক্ষা একদিন রূপ নেয় সাক্ষাতে- আমরা দেখা করি। এরপর একদিন আমি আদিন্দা কানজাকে বলি, চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি। সেও রাজি হয়ে যায়।
২০২৪ সালের এপ্রিলে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ে করার আগে ওই তরুণী জানিয়েছিলেন, তার মা-বাবা মারা গেছেন এবং বিয়েতে উপস্থিত থাকার মতো কোনো আপনজন তার নেই। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল স্বামী একের বাড়িতে অনাড়ম্বর ও ইসলামি রীতিতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বিয়ের পরেই দেখা দেয় বিপত্তি। বিয়ের পরেও নববধূ ক্রমাগত তার স্বামীর থেকে নিজের লুকিয়ে রাখতে থাকেন এবং গ্রামে স্বামীর পরিবার এবং বন্ধুদের সাঙ্গেও মেলামেশা করতে অস্বীকার করেন। এমনকি ঋতুচক্রের মতো মাসিক অসুস্থতার কারণ উল্লেখসহ নানা অজুহাতে স্বামীর একান্ত ঘনিষ্ঠতা এড়ানোর চেষ্টাও চালাতে থাকেন তিনি। এভাবে চলতে থাকায় নববধূ স্ত্রীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। এরপর তার স্ত্রীর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন স্বামী। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে তিনি তার স্ত্রীর পরিবারের ঠিকানা খুঁজে বের করেন। সব জানতে পেরে চোখ কপালে উঠে যায় তার। তিনি জানতে পারেন, নববধূর মা-বাবা উভয়েই জীবিত এবং সুস্থ রয়েছেন। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, তার স্ত্রী আসলে নারী নন। পুরুষ হয়েও নারীর বেশে এতদিন অভিনয় করে গেছেন তিনি।
উপরের ঘটনাটি তুলে ধরেছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, কানজার প্রকৃত নাম ইএসএইচ। ‘প্রতারক’ এই যুবকের মা-বাবার দাবি, তারা তাদের সন্তানের বিয়ে সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পুলিশের কাছে অভিযোগের পর ওই নববধূকে প্রতারণার অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের ছবিতে অভিযুক্ত ওই নববধূকে সত্যিকারের নারীর মতোই দেখাচ্ছে। তার কণ্ঠস্বরও কোমল, ফলে তাকে সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই প্রতারক পুরুষ (নববধূ) স্বীকার করেছেন, সে আসলে অর্থ হাতিয়ে নিতেই ভয়ংকর এ প্রতারণার ফাঁদ পাতে। এই ঘটনাটি ঘটেছে মুসলিমপ্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়াতে। দেশটির আইন অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতারণার দায়ে চার বছরের জেল হতে পারে ওই নববধূর।a