ফেডারেশন কাপে অসাধারণ এক ফাইনাল উপহার দিল ঢাকা মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংস। একটি ফাইনাল ম্যাচে যা থাকা দরকার তার সবই ছিল ম্যাচটিতে। ময়মনসিংহে হওয়া এই ফাইনালে আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণ, অতিরিক্ত সময়ে গোল, উত্তেজনা ও আপত্তি সবই দেখা গিয়েছে। ছিল অসাধারণ ফুটবলের পসরাও। দর্শকদের পয়সা উসুল এই ফাইনালে অবশ্য শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও শিরোপা জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। ফেডারেশন কাপের এই শিরোপা জয়ে এবার ট্রেবলও জিতল সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল দলটি। বুধবার (২২ মে) ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও অতিরিক্ত সময়ের গোলে মোহামেডানকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। ফেডারেশন কাপ জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে ট্রেবল জয় করলো বসুন্ধরার ক্লাবটি। ফেডারেশন কাপের আগে স্বাধীনতা কাপ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাও জিতেছে কিংস। বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর মধ্যে এই কীর্তি গড়া তৃতীয় ক্লাব তারা।
বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচে বসুন্ধরার চেয়ে শক্তিমত্তায় পিছিয়ে থাকার পরেও সমান তালে লড়েছে সাদা কালোরা। মোহামেডানের জমাট রক্ষণে প্রথমার্ধে আক্রমণ করেও গোলমুখ খুলতে পারেনি কিংস। কিংসের আক্রমণ মুখ থুবড়ে পড়ছিল মোহামেডানের ডিফেন্স লাইনে। গোলশূন্য ভাবে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধেও সমান তালে লড়ে দুই দল। ৪৮ মিনিটে দোরিয়েলতনের শট অল্পের জন্য বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। এরপরই একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে মোহামেডান। তবে কিংসের গোলকিপার শ্রাবনের কারণে পরাস্ত হতে হয় সাদা-কালোদের। ৬০ মিনিটে বদলি নামা শাহরিয়ার ইমনের জোরালো শট ঠেকান তিনি। তবে তিন মিনিট পর দিয়াবাতের পাসে সোহেল রানাকে কাটিয়ে ইমানুয়েল সানডে বাঁ পায়ের বুলেট গতির শটে পরাস্ত হন গোলকিপারকে। মুহূর্তেই উৎসব শুরু হয় সমর্থকদের। সেই গোলের পর মনে হচ্ছিল শিরোপা সাদা-কালো শিবিরই ধরে রাখবে। তবে ৮৫ মিনিটে কিংসের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মিগুয়েল দামাসিনো সেটি হতে দেয়নি। তার দুর্দান্ত সোলো গোলে সমতায় ফেরে কিংস।
১-১ গোলের সমতা নিয়ে ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। ১০৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচে সমতা ছিল। তবে সেই মিনিটে কর্নার থেকে আসা বল মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজনের হাত ফসকে গেলে কিংসের জাহিদ বল জালে পাঠান। গোলের উল্লাসে মাতে কিংসের খেলোয়াড় ও সমর্থকরা। তবে এই গোল মেনে নেয়নি মোহামেডান। তাদের দাবি গোলের আগে গোলরক্ষক সুজনকে ফাউল করেছে কিংসের খেলোয়াড়রা। প্রতিবাদ স্বরূপ মাঠ থেকেও উঠে যান তারা। তরে রেফারি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এ সময় কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। পরের সময়টুকু কিংসের গোলে শট নিলেও সমতায় ফিরতে পারেনি মোহামেডান। ফলে হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। অন্যদিকে শেষ বাঁশির সঙ্গেই ট্রেবল জয়ের আনন্দে মাতে কিংসের খেলোয়াড়রা।