পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও ধারণের পর মোটা অংকের অর্থ আদায়ের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার স্ত্রী পারভীন খাতুন শাহানাজ ওরফে রুপসীসহ চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২১ শে মে) দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাকাওয়াত হোসেন সজিব মালিথার স্ত্রী পারভীন খাতুন শাহানাজ ওরফে রুপসী (২৬), ঈশ্বরদী পৌর শহরের মশুরিয়াপাড়া এলাকার মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে জালাল হোসেন (২২) ও দাশুড়িয়া বালিয়াডাঙ্গা (বাঘ হাসলা) গ্রামের বাদশা মন্ডলের ছেলে আজমল হক (২৭)।
জানা গেছে, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে পাবনা সদর থানার টেবুনিয়া ভজেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আফসার আলী প্রাং এর ছেলে আ. লতিফের বাসায় ভাড়া থাকতেন ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাকাওয়াত হোসেন সজিব মালিথা ও তার স্ত্রী। সেই সুবাদে লতিফের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন পারভীন খাতুন। এরপর মুঠোফোনে তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। গত সোমবার (২০ মে) বিকেলে ব্যবসায়িক কাজে আব্দুল লতিফ ঈশ্বরদীতে গেলে আবারও মুঠোফোনে যোগাযোগ হয় পারভীন খাতুনের সঙ্গে। পারভীন তাকে ঈশ্বরদী পৌর শহরের পূর্বটেংরী বকুলের মোড়ে তাদের নতুন ভাড়া বাসায় বেড়াতে যাওয়ার দাওয়াত করলে আব্দুল লতিফ সেখানে যান। পরে পারভীন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আটককৃত আসামি জালাল ও আজমলের সহযোগিতায় তার বাসায় অজ্ঞাতনাম এক মহিলার সঙ্গে আব্দুল লতিফকে একটি রুমে আটকে রেখে মারধর করেন। এরপর আব্দুল লতিফকে বিবস্ত্র করে ঐ মহিলার সঙ্গে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন তারা। এ সময় ভিডিও ও ছবি ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে লতিফের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। পরে একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে আব্দুল লতিফকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে পরের দিন ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখিত মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরের সূত্র ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঐ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। ঈশ্বরদী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোনে সখ্য গড়ে অশ্লীল ভিডিও ধারণের মাধ্যমে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। আসামিদের আটকের সময় উল্লেখিত স্ট্যাম্প, নগদ টাকা ও ভিডিও ধারণকারী মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার সংবাদ প্রকাশ না করা শর্তে এক সাংবাদিকের সঙ্গে অর্থ লেনদেন করা হয় বলেও জানা গেছে।