বয়সটা ৩৫-এর কোটা পেরিয়েছে বছর তিনেক আগেই। অথচ এখনো প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগকে থমকে দেন বছর বিশের তরুণের ক্ষীপ্রতায়। সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হয়েও ক্যারিয়ারে এখনো লালকার্ড দেখেননি। রিও ডি জেনিরো থেকে শুরু হওয়া যাত্রাটা মিলান, প্যারিস ঘুরে এখন থেমেছে লন্ডনে। সার্জিও রামোস কিংবা ভ্যান ডাইকের মতো খ্যাতি তার নেই, লড়াইটা তিনি করেন নিজের সাথেই। চেষ্টাটা থাকে নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার। তিনি থিয়াগো সিলভা, ব্রাজিল রক্ষণের কাণ্ডারি। জোগো বোনিতোর দেশ ব্রাজিল। যুগে যুগে বিশ্ব ফুটবলকে ব্রাজিল উপহার দিয়েছে পেলে, গ্যারিঞ্চা, রোনালদো, রোনালদিনহো, নেইমারদের মতো ফুটবলশিল্পীদের; কিন্তু সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার? লুইস পেরেইরা, আদাইর, লুসিওতে এসে থমকে যেতে হয়। মাথা চুলকে আর কোনো বৈশ্বিক তারকার নাম মনে পড়ে না। লুসিওর রেখে যাওয়া মশালটাই এক দশক ধরে বহন করে চলেছেন থিয়াগো সিলভা। জাতীয় দলে প্রথমবার আসার পর থেকে আজও রক্ষণভাগকে আগলে রেখেছেন নিবিড় যত্নে।
ছোটবেলায় অন্য দশটা ব্রাজিলিয়ান বালকের মতোই রিও ডি জেনিরোর অলিগলিতেই ফুটবল খেলতে খেলতেই বেড়ে ওঠা থিয়াগো সিলভার। কিন্তু ছোটবেলায় কোনো ক্লাবই তাকে নিতে চায়নি। স্থানীয় ক্লাব মাদুরেইরা, ওদারিয়া কিংবা বোতাফোগো সব খানেই ট্রায়াল দিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এমনকি বোতোফোগোতে কোচরা তাকে দেখতেই চাননি। অবশেষে স্থানীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ভালো খেলার সুবাদে নজরে আসেন এক ফুটবল স্কাউটের। তিনিই তাকে সুযোগ করে দেন নিচের সারির ক্লাব ফুটেবলের হয়ে খেলার। ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল মিডফিল্ডার হয়ে। ফুটবলের হয়ে সিনিয়র পর্যায়ে খেলতে খেলতেই নজরে আসেন ইউরোপের। তাকে দলে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে পোর্তো আর এফসি রোমা। তবে ব্রাজিল আর পর্তুগালের সংস্কৃতি, ভাষা একই হওয়ায় তরুণ ব্রাজিলিয়ানদের জন্য ভরসার পাত্র পর্তুগিজ ক্লাবগুলো। থিয়াগো সিলভাও সুযোগ লুফে নিতে দেরি করেননি, রোমার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ২০০৪ সালে পাড়ি জমান পোর্তোতে। এরপর রাশিয়া, ব্রাজিল, ইতালি ফ্রান্স ঘুরে পাড়ি জমান লন্ডনে। ২০২২-২৩ মৌসুমে পিএসজি থেকে এক বছরের জন্য যান চেলসিতে; কিন্তু সেখানেই কাটিয়ে দেন চার বছর। এবার দেশ ব্রাজিলে ফিরছেন আবারও।