ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন করে অগ্রসর হতে শুরু করেছে রাশিয়া। রুশ সেনারা ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে সাঁজোয়া বহর নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার আকস্মিক এই অভিযান শুরু করে মস্কো। এর আগেও ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে একবার খারকিভের দখল নিয়েছিল রুশ সৈন্যরা। তবে ইউক্রেনের প্রবল প্রতিরোধের মুখে সেসময় শিহরটি ছেড়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় মস্কো। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এত দিন রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্ব দিকের অঞ্চলগুলোতে অভিযান চালালেও পুতিন এবার নতুন ফ্রন্ট খুলতে চাচ্ছেন।
এরই মধ্যে রুশ বাহিনী খারকিভ শহরের দিকে বেশ খানিকটা এগিয়েও গেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ প্রথমবারের মতো বলেছেন, রাশিয়া সুমি ও চেরনিহিভের কাছাকাছি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের কাছে খারকিভ শহরের উত্তরে সেনা সমাবেশ করেছিল। রুশ সেনারা ভোর ৫টার দিকে সাঁজোয়া বহর নিয়ে হামলা শুরু করে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা খারকিভে রুশ বাহিনীকে মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, রুশ বাহিনী খারকিভের সীমান্তবর্তী শহর ভভচানস্কে ব্যাপক গোলা ও বোমা হামলা চালিয়েছে। অবশ্য ইউক্রেন মাসখানেক আগেই এই অঞ্চলে রাশিয়া সেনা সমাবেশ করছে বলে জানিয়েছিল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রাশিয়া পাল্টা আক্রমণের একটি নতুন ঢেউ শুরু করেছে। বর্তমানে সেখানে ভয়ংকর যুদ্ধ চলছে। জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ১৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রণক্ষেত্রে তীব্র লড়াই চলছে বলে তাকে রিপোর্ট করেছেন শীর্ষ কমান্ডার ওলেকজান্দর সিরস্কি। খারকিভের গভর্নর ওলেহ সাইনোহুবো জানিয়েছেন, খারকিভের আশপাশে রুশ সেনারা ব্যাপক গোলাবর্ষণ শুরু করে। তিনি জানান, দুই বছরেরও বেশি সময় আগে যুদ্ধ শুরুর পর খারকিভের শহরতলী ভভচানস্কের জনসংখ্যা ১৭ হাজার থেকে কমে মাত্র কয়েক হাজারে নেমে এসেছে। রাশিয়া আক্রমণ শুরুর পর সেই কয়েক হাজারের মধ্য থেকে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর খারকিভে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়। পরে গত বছর ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের মুখে রুশরা পিছু হটতে থাকে। অবশেষে রুশ বাহিনী আবারও আক্রমণাত্মকভাবে খারকিভের দিকে অগ্রসর হওয়া শুরু করল।
এর আগে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মার্চে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে একটি বাফার জোন তৈরি করতে বলেন, যাতে এই বাফার জোনের বাইরে থেকে ইউক্রেনীয় গোলা রাশিয়ার অভ্যন্তরে পৌঁছাতে না পারে। তারপর থেকে রুশ বাহিনী খারকিভ দখল করতে চাইছে। কারণ এটি রুশ সীমান্ত থেকে তুলনামূলক কাছে।