ঈদুল ফিতরে এবার লম্বা ছুটি মিলেছে নগরবাসীর। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেন রাজধানীবাসী। যে কারণে ঈদের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবারও রাজধানীর সড়কগুলো দেখা যায় ফাঁকা। হাতেগোনা কয়েকটি বাস চলাচল করছে। তবে সড়কে বেড়েছে রিকশার দাপট। আবার এলাকা বিশেষে লেগুনা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দাপটও দেখা গেছে।সড়কের চিত্র আগের মতো না হলেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোর চিত্র কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্র, চিড়িয়াখানা, সিনেমা হলগুলোতে ভিড় করছেন নগরবাসী। উন্মুক্ত পরিবেশে ছুটি কাটাতে, ঈদের রঙে রাঙ্গাতে নগরবাসী এসব বিনোদন কেন্দ্রে জড়ো হয়েছেন।
তীব্র গরম আর রোদ উপেক্ষা করে পরিবারের ছোট-বড় সবাইকে নিয়ে এখন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মেতে উঠেছেন ঈদ আনন্দে। রাজধানীর হাতিরঝিল, শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, আগারগাঁওয়ে বিমান বাহিনী জাদুঘর এবং বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার দেখতে বের হয়েছেন অনেকে। রাজধানীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান জাতীয় চিড়িয়াখানা। বাঘ, সিংহ, হরিণ, ময়ূর, বানর, সাপ, নানারকম পাখি ও জলহস্তীসহ বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। রামপুরা থেকে পরিবার নিয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছেন দোয়েল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখে খুব ভালো লাগছে। তবে, চিড়িয়াখানার এরিয়া অনেক বড় হওয়ায় সবটুকু ঘুরে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। পা ব্যথা করছে। তাই যতটুকু সম্ভব ঘুরে দেখালাম। চিড়িয়াখানার পরিবেশটা আগের চেয়ে একটু উন্নত হয়েছে।’
এদিকে, রাজধানীর হাতিরঝিলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আজ সকাল থেকেই নগরবাসীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে হাতিরঝিল। ঈদ উপলক্ষে হাতিরঝিলও সেজেছে নতুন সাজে। নতুন সাজে প্রস্তুত করা হয়েছে চক্রাকার বাস ও ওয়াটার বোট। রাজধানীর বছিলা থেকে ওয়াটার ট্যাক্সিতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন জাকির হোসেন তমাল। তিনি বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাতিরঝিলে ঘুরতে এসে ওয়াটার ট্যাক্সিতে উঠলাম। এখন হাতিরঝিলের পানিও পরিষ্কার। পানিতে কোনো দুর্গন্ধ নেই। ওয়াটার ট্যাক্সিতে উঠে পরিবারের সবাই খুব আনন্দ করছে।’ ধানমন্ডি লেকপাড়ে ঈদে সব বয়সী মানুষের ভিড় বাড়ে। এখানে ঘুরতে আসা ফকির জহুরুল বলেন, ‘ঈদের পর দিন তাই বের হয়েছি। সারাদিন ঘুরে রাতে বাসায় ফিরব।’
শুধু রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নয়, আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও অনেকে এই বিনোদনকেন্দ্রে ঘুরতে এসেছেন। ছোট-বড় সবাই জলাধারের পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। সারাদিন তীব্র গরম থাকলে বিকেলের দিকে কিছুটা স্বস্তির বাতাস পেতে মানুষ ছুটে আসছে এখানে। অপরদিকে ফাঁকা মহানগরীতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনি। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশের একাধিক টিম। পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে।