আজ বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
Logo ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অবরুদ্ধ Logo মাদক সেবনে বাঁধা দেওয়ায় মা ও ছেলেকে কুপিয়ে জখম Logo তালায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ভেজাল দুধ ব্যবসায়ীকে জরিমানা! Logo সাতক্ষীরায় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা Logo কৃষিতে ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার হ্রাসকরণের দাবিতে মানববন্ধন Logo সাতক্ষীরায় নারী ও কন্যাশিশুর সুরক্ষায় দলিত’র র‍্যালী ও মানববন্ধন Logo ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসে ভারতীয়দের হামলা, ছিঁড়ে ফেলা হলো পতাকা Logo বাগেরহাটে বাসস্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপি’র দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া Logo বিজিবি’র পৃথক অভিযানে পাঁচলাখ টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ Logo নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় ক্যাব’র মানববন্ধন
বিজ্ঞাপন দিন
জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় পত্রিকাসহ অনলাইন পোর্টালে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন। মেসার্স রুকাইয়া এড ফার্ম -01971 211241

চতুর্থ ধাপে আরও ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ

  • রিপোর্টার
  • আপডেট সময়: ০৯:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

আরও ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে চার দফায় ৫৬০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করলো সরকার। রোববার (২৪ মার্চ) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থ ধাপে ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ করেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এই তালিকা শেষ নয়। আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আগে তালিকা চূড়ান্ত তালিকা করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করছি। তালিকা প্রণয়নে কোনো শৈথিল্য ছিল না, এতে যদি কোনো ভুল ভ্রান্তি থেকে থাকে তাহলে সেটা জানাতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এর আগে প্রথমে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালের ২৯ মে দ্বিতীয় তালিকায় ১৪৩ জন এবং সর্বশেষ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয় আরও ১০৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা।

তালিকা প্রস্তুতের পদ্ধতি কী ছিল সে বিষয়ে মন্ত্রী জানান, প্রথম পর্বে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ১৯১ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে তথ্যের ভিত্তি ছিল ১৯৭২ সালে ১৬ ডিসেম্বর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একটি গ্রন্থ। তাতে শহীদ বুদ্ধিজীবী ১০৯ জনের তালিকা ছিল। এ ছাড়া ডাক বিভাগ ৯ পর্বে ১৫২ শহীদ বুদ্ধিজীবীর নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিল। যাচাইবাছাই কমিটি এই দুটি তালিকা ধরে ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করে। দ্বিতীয় পর্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৯ মে ১৪৩ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করে। ওই পর্বে তথ্যের ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষকদের গ্রন্থে থাকা শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম বা নামের তালিকা।

তৃতীয় পর্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ১০৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের তালিকা প্রকাশের পর অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য আবেদন করতে থাকেন। কমিটি সেই আবেদনগুলোও আমলে নিয়েছে। এ ছাড়া প্রজন্ম ৭১, রক্তঋণ, ১৯৭১: গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর থেকে নাম সংগ্রহ করেছে কমিটি। এরপর কমিটি যাচাইবাছাই করে তৃতীয় পর্বের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। আর চতুর্থ পর্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের তালিকা প্রকাশের পর অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য আবেদন করতে থাকেন। কমিটি সেই আবেদনসমূহও আমলে নিয়েছে। এ ছাড়া প্রজন্ম ৭১, রক্তঋণ, ১৯৭১: গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর থেকে নাম সংগ্রহ করেছে কমিটি। এরপর কমিটি যাচাই বাছাই করে চতুর্থ পর্বের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞানুসারে যাচাই-বাছাই জাতীয় কমিটি চার পর্বে মোট ১৬টি পেশার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে, সাহিত্যিক ১৮ জন, দার্শনিক একজন, বিজ্ঞানী ৩ জন, চিত্রশিল্পী একজন, শিক্ষক ১৯৮ জন, গবেষক একজন, সাংবাদিক ১৮ জন, আইনজীবী ৫১ জন, চিকিৎসক ১১৩ জন, প্রকৌশলী ৪০ জন ,স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী ৩৭ জন, রাজনীতিক ২০ জন,সমাজসেবী ২৯ জন, সংস্কৃতিসেবী ও চলচ্চিত্র, নাটক, সঙ্গীত, শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ৩০ জন। সব মিলিয়ে ৫৬০ জন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রনয়ণের লক্ষ্যে গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে গঠিত এ কমিটির সদস্য সংখ্যা ১১ জন। (মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ৩ জন, গবেষক ৬জন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ২জন) পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর ২ জন সদস্য বৃদ্ধি করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট যাচাই-বাছাই কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা নির্ধারণের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রাথমিক ভাবে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৮ সদস্য বিশিষ্ট দুটি উপ- কমিটি গঠন করে। এই উপ-কমিটির সুপারিশের আলোকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২১ মার্চ ২০২১ তারিখ সংজ্ঞটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে। অনুমোদিত সংজ্ঞায় ছিল ‘যে সকল সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিক, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী ও চলচ্চিত্র, নাটক, সঙ্গীত, শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন, তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী।’

সারাদেশের জন্য সময়কাল ২৫শে মার্চ ১৯৭১ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১। তবে ঢাকা জেলার ক্ষেত্রে ৩১শে জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখ পর্যন্ত। এরপর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত উপ-কমিটি প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তালিকা যাচাই-বাছাই করে জাতীয় কমিটির কাছে সুপারিশ সহকারে তালিকা প্রণয়ন করে। জাতীয় কমিটি চূড়ান্তভাবে যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে তালিকা অনুমোদন করে। চার পর্ব মিলিয়ে মোট ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দুই এক দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হবে। আর্থিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা বা তাদের পরিবার যে সহযোগীতা পেয়ে থাকেন, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবার তা পান না। শুধু রাষ্ট্রীয় সম্মান পান। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিষয়টা স্পেশাল ক্যাটাগরি। তাদের কোনো আর্থিক সহযোগীতা দেয়া হয় না। তবে চাকরি, চিকিৎসার মতো বিষয়গুলতে বিশেষ বিবেচনায় সহায়তা পান।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার লাল সূর্য যখন বাংলার আকাশে উঁকি দিচ্ছিল, ঠিক তখন দেশকে মেধাশূন্য করতে একে একে শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্রকার, কবি- সাহিত্যিকদের লক্ষ্য করে হত্যা করেছিলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। অনেককে পরিবারের মধ্য থেকে ধরে নিয়ে যায়, যারা পরবর্তীতে আর ফিরে আসেননি। এমনটি তাদের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে সেই তালিকা চূড়ান্ত করলো সরকার।

ট্যাগস:

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অবরুদ্ধ

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

চতুর্থ ধাপে আরও ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ

আপডেট সময়: ০৯:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

আরও ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে চার দফায় ৫৬০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করলো সরকার। রোববার (২৪ মার্চ) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থ ধাপে ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ করেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এই তালিকা শেষ নয়। আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আগে তালিকা চূড়ান্ত তালিকা করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করছি। তালিকা প্রণয়নে কোনো শৈথিল্য ছিল না, এতে যদি কোনো ভুল ভ্রান্তি থেকে থাকে তাহলে সেটা জানাতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এর আগে প্রথমে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালের ২৯ মে দ্বিতীয় তালিকায় ১৪৩ জন এবং সর্বশেষ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয় আরও ১০৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা।

তালিকা প্রস্তুতের পদ্ধতি কী ছিল সে বিষয়ে মন্ত্রী জানান, প্রথম পর্বে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ১৯১ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে তথ্যের ভিত্তি ছিল ১৯৭২ সালে ১৬ ডিসেম্বর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একটি গ্রন্থ। তাতে শহীদ বুদ্ধিজীবী ১০৯ জনের তালিকা ছিল। এ ছাড়া ডাক বিভাগ ৯ পর্বে ১৫২ শহীদ বুদ্ধিজীবীর নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিল। যাচাইবাছাই কমিটি এই দুটি তালিকা ধরে ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করে। দ্বিতীয় পর্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৯ মে ১৪৩ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করে। ওই পর্বে তথ্যের ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া তালিকা এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষকদের গ্রন্থে থাকা শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম বা নামের তালিকা।

তৃতীয় পর্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ১০৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের তালিকা প্রকাশের পর অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য আবেদন করতে থাকেন। কমিটি সেই আবেদনগুলোও আমলে নিয়েছে। এ ছাড়া প্রজন্ম ৭১, রক্তঋণ, ১৯৭১: গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর থেকে নাম সংগ্রহ করেছে কমিটি। এরপর কমিটি যাচাইবাছাই করে তৃতীয় পর্বের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। আর চতুর্থ পর্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের তালিকা প্রকাশের পর অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য আবেদন করতে থাকেন। কমিটি সেই আবেদনসমূহও আমলে নিয়েছে। এ ছাড়া প্রজন্ম ৭১, রক্তঋণ, ১৯৭১: গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর থেকে নাম সংগ্রহ করেছে কমিটি। এরপর কমিটি যাচাই বাছাই করে চতুর্থ পর্বের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞানুসারে যাচাই-বাছাই জাতীয় কমিটি চার পর্বে মোট ১৬টি পেশার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে, সাহিত্যিক ১৮ জন, দার্শনিক একজন, বিজ্ঞানী ৩ জন, চিত্রশিল্পী একজন, শিক্ষক ১৯৮ জন, গবেষক একজন, সাংবাদিক ১৮ জন, আইনজীবী ৫১ জন, চিকিৎসক ১১৩ জন, প্রকৌশলী ৪০ জন ,স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী ৩৭ জন, রাজনীতিক ২০ জন,সমাজসেবী ২৯ জন, সংস্কৃতিসেবী ও চলচ্চিত্র, নাটক, সঙ্গীত, শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ৩০ জন। সব মিলিয়ে ৫৬০ জন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রনয়ণের লক্ষ্যে গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে গঠিত এ কমিটির সদস্য সংখ্যা ১১ জন। (মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ৩ জন, গবেষক ৬জন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ২জন) পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর ২ জন সদস্য বৃদ্ধি করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট যাচাই-বাছাই কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা নির্ধারণের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রাথমিক ভাবে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৮ সদস্য বিশিষ্ট দুটি উপ- কমিটি গঠন করে। এই উপ-কমিটির সুপারিশের আলোকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২১ মার্চ ২০২১ তারিখ সংজ্ঞটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে। অনুমোদিত সংজ্ঞায় ছিল ‘যে সকল সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিক, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী ও চলচ্চিত্র, নাটক, সঙ্গীত, শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন, তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী।’

সারাদেশের জন্য সময়কাল ২৫শে মার্চ ১৯৭১ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১। তবে ঢাকা জেলার ক্ষেত্রে ৩১শে জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখ পর্যন্ত। এরপর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত উপ-কমিটি প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তালিকা যাচাই-বাছাই করে জাতীয় কমিটির কাছে সুপারিশ সহকারে তালিকা প্রণয়ন করে। জাতীয় কমিটি চূড়ান্তভাবে যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে তালিকা অনুমোদন করে। চার পর্ব মিলিয়ে মোট ৫৬০ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দুই এক দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হবে। আর্থিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা বা তাদের পরিবার যে সহযোগীতা পেয়ে থাকেন, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবার তা পান না। শুধু রাষ্ট্রীয় সম্মান পান। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিষয়টা স্পেশাল ক্যাটাগরি। তাদের কোনো আর্থিক সহযোগীতা দেয়া হয় না। তবে চাকরি, চিকিৎসার মতো বিষয়গুলতে বিশেষ বিবেচনায় সহায়তা পান।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার লাল সূর্য যখন বাংলার আকাশে উঁকি দিচ্ছিল, ঠিক তখন দেশকে মেধাশূন্য করতে একে একে শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্রকার, কবি- সাহিত্যিকদের লক্ষ্য করে হত্যা করেছিলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। অনেককে পরিবারের মধ্য থেকে ধরে নিয়ে যায়, যারা পরবর্তীতে আর ফিরে আসেননি। এমনটি তাদের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে সেই তালিকা চূড়ান্ত করলো সরকার।