এশিয়ার বাজারে আবারও অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে। সরবরাহ কমছে এমন খবরেই গত সপ্তাহে তেলের দাম ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এরপর সোমবার (১৮ মার্চ) সপ্তাহের প্রথম দিনেও তেলের মূল্যবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম (মে মাসের জন্য) ৩ সেন্ট বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৫.৩৭ ডলারে উঠেছে। এপ্রিল মাসের জন্য ডাব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১০ সেন্ট বেড়ে ৮১.১৪ ডলারে উঠেছে। ফলে নভেম্বরের পর তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ।
শুক্রবার তেলের দাম কিছুটা কমলেও পুরো সপ্তাহের হিসাবে ব্রেন্ট ও ডাব্লিউটিআই ক্রুড তেলের দাম উভয়ই ৪ শতাংশ বেড়েছে। গত মাসে সামগ্রিকভাবে তেলের দাম সীমার মধ্যেই ছিল; কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) তেলের চাহিদা বৃদ্ধির যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে যে তেলের দাম গত নভেম্বর মাসের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এএনজেডের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। গত সপ্তাহে রাশিয়ার তেল পরিশোধনাগারে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার সূত্রে প্রতিষ্ঠানটি এ কথা বলেছে।
গত শনিবার রাশিয়ার ক্রাসনাদারের স্ল্যাভিন্সক পরিশোধনাগারে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় কিছুক্ষণের জন্য আগুন লেগে যায়। এই পরিশোধনাগারে বছরে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন তেল পরিশোধন করা হয়, যার দৈনিক সক্ষমতা এক লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল।
রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এ হামলায় বছরের প্রথম প্রান্তিকে রাশিয়ার তেল পরিশোধনের সক্ষমতা ৭ শতাংশ কমেছে। এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক ঘোষণায় মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত রবিবার তিনি নিশ্চিত করেছেন, গাজার রাফা অঞ্চলে যে ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন, সেখানেও অভিযান চালানো হবে। যদিও ইসরায়েলের মিত্ররা নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলত্জ বলেছেন, সেটা হলে এই অঞ্চলের শান্তি নিশ্চিত করা ‘খুবই কঠিন’ হয়ে যাবে।
আগামী বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানা যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, ফেড কবে নাগাদ নীতি সুদহার হ্রাস করবে, সে বিষয়ে সেদিন আরো পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
বিশ্লেষণকারী সংস্থা আইজির বাজার বিশ্লেষক টনি সিকামোর বলেন, সম্ভবত ফেডারেল রিজার্ভ এ মাসে নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখবে; এরপর জুন মাসে তারা নীতি সুদহার কমাবে কি না, তাও এখন রীতিমতো টস করার মতো বিষয় হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে সুদহার কমলে চাহিদা বাড়বে; এতে তেলের দাম আরো বাড়ার সম্ভাবনা আছে।